সেদিন জ্যোৎস্না ভরা রাত দুপুরে তুমি এসেছিলে ....
শিশির ভেজা মিয়াম ঘাসের ঘুম ভেঙেছিলে ।
সচকিত লক্ষী পেঁচা অপলকে তাকিয়েছিল ।
একটি ঘাস ফরিং ফরিয়াদ জানিয়ে লম্ফ মেরে,
নিজের বসতবাটি পরিবর্তন করে নিয়েছিল ।
ওদের স্বপ্ন ভেঙে ছিল,মোদের জেগেছিল ।
অভয়দানে তুমি ছিলে শান্ত,ধীর ও গম্ভীর,
যেভাবে মফস্বল শহর হয় নিশ্চুপ ,রাত গভীর ।
মাঝে মাঝে শুধু নব দম্পতির অস্পষ্ট গুঞ্জন_
ভেসে আসে কুলুকুলু নদীর জলের ধারায় ।
আমরাও আছি সে ধারায় জীবনের অনন্ত পাড়ায় ;
কেউ এসে হাত ধরে জীবনের রঙ গুলো
দেখিয়ে যায় চোখে-চোখে, মিলিয়ে যায় মনে- মনে,
মেখে যায় হৃদয়ে-হৃদয়ে  ।  
এসেছিলে তুমি নিয়ে একঝুড়ি জীবনের স্বপ্ন,
স্বপ্নে গড়া ঝুড়িটা দুজনার চোখে চোখেই ছিল ...
তুমি ও স্বপ্নের ঝুড়ি দুটোই ছিল অতি সামান্য ।
ছিল না তাতে গন্ধরাজে র মত নামী দামী ফুল ।
তবুও লাল নীল সবুজের মেলায় ছিল অনন্য ।
কচি কাঁচা মন, ফুলের মতন ,এ অমোঘ রতন ,
কেউ তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়,কেউ করে যতন ।
তোমাকে কাছে পেয়ে মনে হয়েছিলো ...
সুখ পাখিটা আমার মনের মত  ,
বাঁধবে বাসা দীঘির পারে ,গাইবে গান ইচ্ছে যত  ।
খুঁজে পাব তারার ভিড়ে আমাকে ধ্রুবতারার মত ।
অতৃপ্ত সুখের অভিলাষা ঘুরপাক
খেয়েছিল স্বপ্নীল সাগরে,
কিন্তু হায়! মেঘ করেনি সেদিন .. তবু
বারিপাত হয়েছিল অঝরে, এক যুগ পরে ।
সমুদ্র সফেন তলিয়ে যায় অন্ধকার গহ্বরে ।
অনেক বছর ধরে নদী বইছিল আপন বেগে ,
ঢল নেমে এসে নদী বাঁক নিয়ে নিল এক বঙ্কিম মোড়ে ।
জীবন হলো ছিন্ন,দিশা হলো ভিন্ন,মিলবে একদিন ঐপারে।
চৈত্রের শেষ হতেই শ্রাবণের ধারা নেমে এসেছিল ।
ঘোর অন্ধকার, দৃষ্টির অগোচরে এপার ওপার ।
মেঠো পথ ধরে যেদিন হেঁটেছিলাম বহুদূর  ...
আজ সে পথ হয়ে গেছে কংক্রিট ।
হারিয়ে গেছে তাই মেঠো গন্ধ ,পুরোনো সুর !
আর তার তলে দেবে গেছে  ভালবাসা ।
সদাচার প্রতিষ্ঠার কাছে জলীয়বাষ্প, ভ্যাপষা ।
অর্থ লিপসা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নই ছিল বড় ,
তুমি চেয়েছিলে প্রত্যুতর ;
আমি ছিলাম নির্বাক নিরুত্তর ।
তাই তোমার পথ করে নিলে ভিন্ন,
পেছন ফিরে দেখ নাই, তুমি ধন্য ।
তোমার দেয়া ফুলগুলো আজ শুকিয়ে গেছে,
কিন্তু তার সুঘ্রাণ আজো রয়ে গেছে হৃদয়ে ।
এই ঘ্রাণ ও মেঠো গন্ধে পরিনত হবে একদিন,
হে ঈশ্বর,আমায় মিলাবে যেদিন ধরণীর মৃন্ময়ে ।


বাবুল আচার্যী     15/08/2016