পুরাণের আদিরক্তে জন্ম আমার গ্রহদের অভিশাপে,
নটরাজ রক্তে দিয়েছেন পুরে এক বিষাক্ত আওয়াজ!
সোমপুরে সাম্যের দিনে বেড়ে ঊঠা গুপ্ত প্রলয় কীট,
যদিও বৈদ্য দিয়েছেন রায় মাথা ভরা পুরোটাই ছিট!
আমি কাব্যের দিনে চাঁদকে ছিঁড়েছি প্রণয়ীর ছাদে,
পুড়িয়েছি সুখের গঞ্জিকা অসময়ের অশুভ বজ্রপাতে!
তবুও অশ্রুত আর্তনাদে রোমকূপে শিহরণ অকারণে,
আমি যে মানুষ; মানুষই তো পুড়ছে নগরের আগুনে!
ভুলে ভরা ইতিহাস ছিঁড়ে তার বানিয়েছিলাম কাবাব,
মহামতি সেকান্দার আজো পাল্টায়নি তস্করের স্বভাব!
যতোবার ছিঁড়েছি ততোবার মিথ্যা লিখেছে বিজেতারা,
উত্তোলিত ফণা নিয়েও তো আমিই বন্দী পদ্মগোখরা,
রপকথা মিথ্যুক! আমি গল্পের মিথে বিদ্রোহী অরোরা!  
হোয়াংহো, রোমা, সিরিয়ার বুক চিরে দিল দুর্বৃত্ত প্লেগ,
বন্যার মতো টেনে নিল কয়েক লক্ষাধিক বিকৃত শব,
এখনো আমার প্রমিথিয়ুসের মতো চিরজাগ্রত আবেগ,
মহামারীর চোখে চোখ রেখে ফিরে চাই জীবনের সব!
পরাভুত নিশিদৈত্যকে সাথে নিয়ে প্রশ্ন করি নিয়তিকে,
কখনো কেঁদেছ কি মহাজঞ্জালে মজ্জিত মানুষের নীল-
শোকে? হাতে খড়গ ঘুরালে অকারণে সকলে তাজ্জব,  
আমিই যে মানুষ! জমিয়ে রেখেছি লক্ষ বছরের ক্ষোভ!
মেলানকোলিয়ার তোতা সারাদিন কেন বলে এত কথা?
পুরোসময় বাঁকাই শিক, আলাদা করা দরকার খাঁচাটা,
কে উড়ালো ফানুস? এই দুরারোগ্য অসময়ে শোকে,  
মানুষ ও তো বোঝেনি আকাশের জলে জমাট ব্যাথাটা!  
তবু মানুষ আমি! টেনে ধরি মহাকালে প্রস্তরে নির্মিত,
রথের চক্রসব! আমি দানবের চেয়েও বেশিই দুর্নিবার,
বারবার মরে যাই, তবু মহাবিশ্বের কানের সুষম পর্দা-
ফাটিয়ে বুনো উল্লাসে, জন্মে জন্মে ফিরে চাই নিহত-
স্মৃতির অধিকার! আমি বেমানান ভাবে দেখাই আজো,
আলেয়ার আড়াল ছিড়ে সমস্ত কিছু স্পর্শ করার স্পর্ধা!