তোমাকে দিলাম প্রশান্ত সাগরের অশান্ত ঢেউমালা,
বিক্ষুব্ধ বাতাসের গর্জনে ভাসা দিক ভোলা আকাশে,
নিঃসীম শুন্যে পথভোলা অভিযাত্রীর রিক্ত নিশ্বাসে,
তুমি আমাকেই ভালোবেসো!
অচেনা স্রোতে নীলতিমিরা ভাসে গাড় নীল বেদনায়,
কত শত নাবিকেরা ডুবেছে এ জলে পূর্ণ অপূর্ণতায়,
তাদের মৃত সব অনুভূতি মুক্তার মতো জমিয়ে নিও-
তোমার স্তব্ধ মনের কোণায়, বিলাসী প্রবালের সাথে,
লোনা জলে প্রশাখা ছড়াবে সবুজ তুলিতে দুঃখদ্বীপ।
নারিকেলি তটরেখা ছুঁয়ে আসা বালিমাখা কাছিমেরা,
তাদের স্ফটিকদেহ বয়ে আনে বিরহ খোলসের ছাঁচে!
সেখানে দাঁড়িয়ে সেইসব ধূসরতম চোখে রেখে চোখ,
তুমি আমাকেই ভালোবেসো! প্রবীণ এ নীলের বুকে,
ঢলে পড়া চাঁদটার ঢঙে!


যাদুঘর ঘেঁষে জমেছে মেঘেরা, সবাই উড়ন্ত হিমবাহ,
ডুবেছে এ শহর, তোমার আমার ঘর ভরা উষ্ণপ্রবাহ!
ফুঁসছে সাপের মতো ব্যর্থ প্রেমের ক্ষোভ মহাসড়কে,
কুন্ডলী পাকিয়ে সবার অলক্ষ্যেই গণিতের হিসাবের-
মতো নিয়মিত!  
এই মৃত যাদুঘর ভেঙ্গে যদি আজ রাতে জেগে উঠে,
কালের সারথিরা! শহরের রাস্তা ধরে ছোটে আগুনের-
দাবানলে পোড়া মৃত সব জন্তুরা! পংগপালের সাথে,
দলে দলে! দেখা হলে তোমার বাড়ির প্রশস্ত গলিতে,
বলে দিও এখন তুমি আমাকেই ভালোবেসেছ আবার,
যেমনটা বেসেছিলে আরো আগে বহুবার!
ভিসুভিয়াসের ভস্ম অগ্নি, ডুবে স্তব্ধ সেই হেরাক্লিয়ন,
সবকিছু করে পার, আমাকেই ভালোবেসো বারেবার!


পুরানো শহর, ভাঙ্গা মিনার অলিন্দে তার গন্ধ প্রাচীন,
ক্ষয়ে যাওয়া ইটে এখনো বাজে বিদ্যাপতির বাক্যবাণ,
পুরানো গজলে বেদনার সুরে বিরহ নাকি মধুর লাগে,
এখনো সেখানে উতলা বাতাসে কতো সুপ্ত শব্দ ভাসে!
জানো না কি তুমি! এখনো তারা ব্যস্ত থাকে অহর্নিশ,
প্রতিটি প্রহর তোমাকে ভেবেই মধ্যযুগের এ বারান্দায়,
ঘন্টা বাজে দিন-রাতে সকল অলীক পুঁথির দোকানে।    
তোমার ভালোবাসার পুঁথিতে আজো অনেক শব্দ বাকি!
ছুটির দিনে ঘুরতে এলে, ভাঙ্গা প্রাসাদের এই নগরে,
বলো তাদের মিষ্টি হেসে, জোনাকির ফুল ছড়িয়ে পাশে,
আজো তুমি ভালোবাসো এই আমাকে! এই আমাকে!