পালটেছে দরোজা! পালটেছে ঘর! পালটেছে তার তালা!
নতুন ছাদে রঙিন সিলিং, আনকোরা এক খাতার মত,  
চাবিটা কিন্তু আগের মতোই তোমার কাছেই রাখা!  
পালটায় সব জানালার কাঁচ; নতুন পোশাকে বাহারি গ্লাস,
চীনামাটির পিরিচ ও কাপ, পালটায় সব জোড়ায় জোড়ায়,
চাবিটা তবুও তোমার কাছেই! খুব যত্নে ব্যাগের ভাঁজেই!
গুপ্তধনের মত আগলিয়ে রাখো নিকষ ডাবরে।


হয়তো চাবির নিয়তি ছিল নির্দয় কোন হস্তান্তর!
অন্য কারো কাছে তোমার দেওয়ার ছিল কথা।
তাই তুমি সেই কথাটা রাখোনি খুব সচেতনেই!
সব কথাই যে রাখতে হবে এমন কথাই কে বলেছে!
চাবিটা তাই তোমার কাছেই-
অমূল্য অলংকারের মুক্তো হয়ে বেঁচে থাকুক!
চাবিটা খুব ছোট্ট, ভেঙ্গে বিলীন পুরনো তালা,
হয়তো চাবিটা অন্যদের কাছে এখন খুবই অনর্থক,
তোমার কাছেই মুক্তো হয়ে এবার সে বেঁচে থাকুক!  


স্মৃতির গেলাসে হয়না ক্ষয়, চূর্ণ কথারা কাঁচের আলোয়,
পাল্টে গিয়ে পুরনো দরোজা, নতুন তালা আছে পাহারায়,
তবুও গুঞ্জন শুনি- চাবিটা নাকি তোমার কাছেই!
হয়তো সবার দৃশ্যমান জগতটা নেই আগের মতোন।
ঘরগুলো সব রঙ বদলায়; বলতে গেলে খুব অচেনা!
যদিও এই দরোজাটা সত্যি অনেক বদলে গ্যাছে,
জানালা গুলোও নতুন কাটা, আগের বাতাস ঢোকেনা আর!
তারপরও সেই আগের সময়, যে ঘর ছিল তোমার আমার-
তার চাবিটা তোমার কাছেই!


খুব সাধারণ লোহার পাতে যত্ন করে ঘষে কাটা,
খুব সাধারণ একটি চাবিতে আটকে রাখে আবেগের ঝুড়ি,
প্রতীক হয়ে তোমার কাছে অনন্তকাল জমা থাকুক!
মেডেল হয়ে তোমার ব্যাগে থাকুক নাহয় লুকিয়ে মুখ!
আমাদের ঘরে টেবিলে চেয়ারে স্মৃতির পাখিরা বসত করে,
যত্ন দিয়ে সামলে রেখো পেখম ছড়িয়ে হাসার এই চাবি!


পাল্টে গ্যাছে আমাদের ঘর, পাল্টে গ্যাছে চেয়ার টেবিল,
মানুষ গুলোও পাল্টে গ্যাছে, চিনবেনা তুমি কাওকেই আর,
ঢুকলেই খুব অচেনা লাগে, স্মৃতিভঙ্গের স্বপ্নের শেষে,
তবুও সেই ঘরটা আছে; তোমার আমার নির্বাক চোখ!
বলা হয়নি অনেক কিছুই; সময় গুলো খুব জীবন্ত!  
চায়ের কাপের গরম ধোঁয়ায় ভার হয়ে যায় চেনা বাতাস।
তেমন সেই মুহূর্ত সব, চোখের ভাষায় একনদী জল,
এই ঘরের প্রতিটি কোনায়, নোংরা ওই ব্যালকনিটায়-
সবখানেতেই লুকিয়ে আছে;
চাবিটা তোমার কাছেই আছে!  


হাতুড়ি অথবা যান্ত্রিক ড্রিল, মিসাইল কিংবা বোমারু বিমান,
বিধ্বংসী লেজার রশ্মি, অথবা তীব্র শব্দ আঘাত,
ভাঙ্গতে পারেনা এই দরোজা! যে ঘর শুধুই তোমার আমার!
এইখানেতে শুধু আমাদের একচ্ছত্র প্রবেশাধিকার।
তার চাবিটা তোমার কাছেই! হস্তান্তর অপ্রাসঙ্গিক!  
মনের ভুলে সচেতনেই যত্ন করে রেখেছো তুলে,
চাবিটা শুধুই তোমার একার,
আর কারো তাতে নেই অধিকার!


ডানের টেবিল বাঁয়ের লকার একটু ছেড়ে দেয়াল ঘেঁষে,
লাগিয়ে ছিলে অনেক শখে ভালো লাগার মাটির টবে,
ভালোবাসার মিষ্টি হাতে একটি পাতাবাহার।
সেও কিন্তু ওখানেই আছে, আকারে অনেক হয়ে গ্যাছে বড়,
পাতাগুলো খুব রঙিন হয়েছে আমাদের সব মুহূর্ত নিয়ে!
কেউ দেখেনা সেই গাছটা, দেখেনা তার রঙের বাহার!
শুধুই দেখি আমরা তাকে, কারণ সে গাছ তোমার আমার!
আর আসে কোটি প্রজাপতি, তুমিই তাদের ডেকেছিলে বলে!
এখনো যদি হাতে হাত রেখে, ঢুকে পড়ি এই বদলানো ঘরে,
দেখতে পাবো হাসছে তোমার শখের পাতাবাহার!
চাবিটা কিন্তু তোমার কাছেই! হয়না বদল এই চাবি আর!
কেঊ পায়না এর অধিকার!  
এই চাবিটার বায়না জানি তুমিই দিয়েছ অনন্ত কাল!