বাহিরে নেমেছে বিকালের আলো অচেনা সরণি জুড়ে,
উদভ্রান্ত মেঘেরা আমাদের মতো জমিয়েছে আড্ডাটা,
বেলা শেষে আশার বসতিকে ঘিরে।
কিছু পথিক বলছে কেন যেন টরমেন্টো! টরমেন্টো!
হয়তো ভিনদেশী ঝড় নামবে এ রাস্তায় কিছুক্ষণ পর।
টেবিলটার এপাশে ওপাশে আমরা দুজন নিভৃতে বসে,
বাচাচ্ছি ভালোবাসা শেষ বিন্দুর মতো নিংড়ানো স্নেহে।
আধো-আলো অন্ধকার একা গুণছে সময়ের ঢেউ,
নাবলা কথারা জীবিত হবে, তবু জানবেনা অন্য কেউ!
কাঁচের দেয়ালে অস্বচ্ছ ছায়া, অস্পষ্ট জনতার কায়া,
সরিয়ে বহুদূরে দুইজনে বসে আছি এই চেনা অন্দরে।


অনেক কালের না শোনা কথাদের সাজিয়ে গুজিয়ে,
রঙ্গিন ব্যাগটার নকশার ভিতরে এনেছো জমিয়ে।
আমিও এনেছি না-বলা গল্প আদর করে খাতায় লিখে,
শুনতে হবে, বলতে হবে! সময় এখানে মাত্রা ছাড়া!
তাকাবোনা কেঊ একবারো ব্যস্ত ঘড়িতে,
আজ আর উঠিঊঠি ভাব থাকবে না!
আমাদের সাধের পদ্মবাগানে আজকে ফুলটা ফুটবেই।
“বুয়েনিস টারডিস” বলছে হাসিহাসি মুখে এক ওয়েটার,
কি খাবে বলো, হাভানা রাইস নাকি চিকেন পেরূভিয়ান?
হঠাত যদি বলি- পালাই চলো এই রাতেই চিচেন ইৎযায়,
কিছু গল্প রেখো জমিয়ে, সব শেষ করে ফেলোনা!
জমাব আসর সময় পেলে উপসাগরীয় বালি গায়ে মেখে।
ওয়েটার বলছে- “ বুয়েনোস টারডিস”
কি কি খেতে চাও আজ তুমিই বল!


স্কচ ভোদকার শূন্য বোতলে সাজানো এদের ঝাড়বাতি,
তোমার হাসির মতোই তাদের লাগছে বিষন্ন সুন্দর!
অল্প বাতাসেই কাঁপে ঝনঝন এখানের পর্দারা লজ্জায়,
কোথাও বাজছে ডেসপাসিটো; জোরে কাঁপে সুর পর্দায়!
যাবে নাকি সেই উপসাগরের তীরে জেলেদের শহরে?
যেখানে মাঝে মাঝে নাকি বাজে এক অচেনা গীটার।
সেখানে বাতাসে উড়বে তোমার চুল অবাধ্যতায় ভরপুর,
চুলগুলো একটু কি হাতে  ছুঁয়ে দিতে দিবে “ মি আমোর”?


এসে গিয়েছে খাবার নানান রকম চেনা অচেনা মেনু,
গ্রাসিয়া! গ্রাসিয়া! ওহে ওয়েটার!
কি বললে! গল্প শুনবে খেতে খেতে ইনকা আর মায়ার!
জানো ওরাও নাকি ভালোবাসতো ঠিক আমাদেরই মতো,
গল্প করতো যুগলে যুগলে চিচেন ইৎযায় চাঁদটা উঠলে,
উথাল পাথাল পূর্ণিমায়!
পিরামিডের পাথর বেয়ে খাঁজে খাঁজে পা ঝুলিয়ে!  
কি বললে, ভুল বলেছি! দাঁড়াও দাঁড়াও! মনে করছি সব।
ওখানেতো অকারণে মরতো আর মারতো মানুষ বেশুমার!
তাতে কি! এখন না হয় করবো একটা কিছু অন্যরকম,
দুজনে ফোটাব ডালিয়া পিনাটা পিরামিডের বুকের ভিতর,
নতুন বিকাল আসবে তখন, বসবো আবার তুমি ও আমি,
সেনো মেক্সিকানের বালু মেখে পা ভিজানো জলের উপর।


পর ফ্যাভর ইমপেরা! একটু দাড়াও” মি এরমোসা ডামা”
বাতাসে গীটার বাজছে এখনো, এতো তাড়াতাড়ি চলে যেওনা!
পাথুরে মাটির অর্কিড ফুলে ফুলে করডোবা হ্যাটটা সাজিয়ো,
পরে নাও দ্রুত পাবলানোটা, নাচবো দুজন জারাবে টাপাটিও।