এমন অনেক রাত নিঃশব্দে পার হয়।
কামিনী ফুলেরা আমাদের ঘিরে,
রাত্রির আলো মিশিয়ে পুকুরের জলে,
সাদা কুয়াশার মতো ছড়াচ্ছে নিঃশ্বাস।
পাতায় ভাসছে কতো অদেখা জোনাকি,
হাঁটছি তোমার সাথে অদৃশ্য ছায়াতে।
আঁধারের ঘুম ভেঙ্গে মধ্যপ্রহরে প্রায়ই,
পামীরের ছাদ থেকে ঊড়ে আসা,
কড়া কফির মতো রাতের তীব্র বাতাসে,
আমাদের পায়ের আওয়াজ ভাসে।
সদ্য আবিষ্কৃত গান্ধার মুদ্রার আওয়াজে,
ঝনঝন করে বাজছে অদৃশ্য টংকার।
কারা যেনো ফিসফিস করে প্রতিরাতে-
“কত শত বছর যে হয়ে গেলো পার,
আকাশ এখন তার রাখেনা হিসাব আর!
তবু ওরা দুজনে হাঁটছে এখনো,
যতদিন আছে এই অস্থির পৃথিবীর আয়ু,
তাদের এই গল্প শেষ হবেনা কখনো!”


এমন অদৃশ্য রাতে নামে পুরাণের পরী,
অসংখ্য মৃত বীর, ব্যর্থ প্রেম।
আরো জাগে কেয়াফুলে ছাওয়া শাম্পান।
মধ্যরাতে তাকে ছুঁয়ে দিলে আলগোছে,
আরব সাগরের স্রোত, একাই ভাসে তারা।
মনে হয় উন্মাদ সব বকছে প্রলাপ।
দেবতার অভিশাপে অকালে পড়েছে ঝরে,
যেইসব হতভাগ্য প্রেমিক-প্রেমিকা,
মধ্যরাতে বাজলে ভুতড়ে গীর্জার অ্যালার্ম,
একে একে জেগে উঠে তারা।
তুচ্ছ করে সব মৃত সামাজিক অন্ধ বিচার,
এই রাতে তারা পুনরায় হাতে রাখে হাত!
অশরীরি হয়ে হাঁটে পাখিদের মতো,
লাল মাটি ছুঁয়ে ঘুমের দেবীর অগোচরে।  

কালো আলখাল্লায় ঢেকে সহজে নিজেকে,
বুড়ো রাত পথে নামে হাতে তারার হ্যাজাক।
ভয় পেয়ে সরে যায় মেছোসাপ ধীরে ধীরে,
বনজুঁই এর ঝোপের ভিতরে।
ঘুমের নিঃশ্বাস ক্লোরোফর্ম হয়ে,
আনছে অচেতনা পৃথিবীর চেতনার গভীরে!
শুধু আমরা দুজন হেঁটে যাই এখনো তেমন,
যেমন করেছি পার বহুকাল ব্যাপী অবিরত,
পাথরের পথ ধরে রোম, ব্যবিলন!