চোখের পাতা বুঝলেই উন্মাদিনীরা আসে,  
ধারালো মরুঝড়ে জ্বলে উঠে অক্ষিকোটরের ছাদ!
অদম্য লাটিমের মতো বনবন করে,
ঘাগড়া পড়া একদল নর্তকী নাচছে তো নাচছেই,
ঘুংগুড়ের শব্দে বিদীর্ণ স্নায়ু অশক্ত, অবশ,
মনে হয় ছিড়ে একাকার! তবু 'বাসব আসবরিক্ত'!
এখানে কামনা মৃত, আসক্তি নিহত!
শুধু তীব্র যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ছে, সবংহনতন্ত্রের,
শিরা ও উপশিরায়!
ঝংকৃত যন্ত্রণা, খিলখিল হাসি বদ্ধ ঘরের ছাদে,
প্রতিদ্ধনিত হয়ে আছড়ে পড়ছে মাথায়!
আটকে পড়েছি বিষময় নহবতে,
প্রদীপে অবশিষ্ট তেলে নেতিয়ে আছে সলতেটা,
একটু বাড়িয়ে দিবে আলো,
আটকা পড়েছি প্রাগৈতিহাসিক কারাগারে,
আত্মার টুটি চেপে ধরে নর্তকীরা প্রবল উল্লাসে হাসছেই,
থামছে না ক্রুড় নৃত্য, আছড়ে পড়ছে যন্ত্রণা,
তাদের পাশবিক হাসি চেতনায় তোলে মাংশাসী ক্ষুধা,
জ্বালিয়ে দিচ্ছে মানবিক বিশ্রাম; কাংখিত আরাম!
বের হবো! আলোটা বাড়িয়ে দিবে?
একটা চোরাপথ খুজে দিবে, ঘাসফড়িং এর মতো,
গড়িয়ে বেড়িয়ে যাব!
সামনের কার্তিকের মাঠে, ছোপ ছোপ অমৃত ফলেছে,
মাকালফলের মতো উজ্জ্বল লাল ভেলভেটে মোড়া,
নিষিদ্ধ ফল, পোকায় কাটা পাতায় থোকা থোকা,
অমৃত নাকি নীল গরল?
নাকি উদবাহু নর্তকীর কামনার্ত মিলন!
কি চেয়েছি জানিনাতো! শুধু যন্ত্রণা পেয়েছি আমরণ!


নারী তুমি কি সমুদ্র মন্থনে গেলে?
আর কতো অনিশ্চিত ভয়! তুমি কি ডাগর চোখে,
খুজছো কাউকে? অপেক্ষায় বৃদ্ধ হলো সময়ের তিথি!
নক্ষত্রের প্রসবযন্ত্রণা শুনে আতংকে জ্বর এসে গেলো,
যান্ত্রিক আকাশ মরিচার মতো ঝরে গেলো!
তুমি কি ভয় পেয়ে অমৃত উদ্ধারে গেলে মেয়ে?
জানো আদিম সাগরে উত্তাল দেবতারা ব্যস্ত স্বীয় স্বার্থে,
সন্ধি করেনা তারা ক্ষুদ্র মানবীর সাথে!
তারা তো অমৃতের লোভে নিজেরাই নিয়ে নিল সব,
বরং অসুর খুজো, বরং বাসুকিকে খুজো,
অমৃত মন্থনে দানবেরা হয়তো আজো একমাত্র সহায়,
মানবী! অমৃতভাষিণী! দেবতারা পেয়ে গেছে সব,
প্রয়োজন নেই তাদের কোন সন্ধি নিরর্থক!
নক্ষত্রের প্রসব যন্ত্রণার কালে, চলো বাসুকিকে নিয়ে,
অসুরের কাছে! তোমার আমার মতো,
তারাও তো বঞ্চিত,
মথিত অমৃতে!


কি যে খুজি, তাইতো জানিনা,
অমৃত? নাকি গরলে মিশ্রিত সুমিষ্ট কামনা?
শুধু চোখ বুঝলেই পোড়াতে আসে আপাদমস্তক,
তীব্র যন্ত্রণা!