(১)
কোথায় তোমাকে রাখবো হেলেন,
ট্রয় তো গিয়েছে পুড়ে!
আমিও তো এক প্রবাসী আকাশ,
ভাসিনি কি বলো ভিনদেশী রোদ্দুরে!


(২)
হাতে নিতে নিতে উষ্ণতা হারালো,
ব্রাজিলিয়ান ক্যাফেইন!
তুমি বলেছিলে সব প্রেমই নীল জল,
ঠোঁটে ছুলে বিষক্রিয়া হবে নিশ্চিত!


(৩)
সবটুকু সমুদ্র শুধু তোমার বুকেই,
বলে কেঁদে ছেঁড়ে গেলে কি রঙমহল?
ত্রিপল ছেড়া টর্নেডো সবাইকে ডুবালো,
ব্যর্থ প্রাচুর্য নিয়ে আমিও এখন অতল!


(৪)
শিরোনাম দেখে পাখি কাঁদছে কেন?
সম্ভাব্য আকাশে হবে পারমাণবিক যুদ্ধ!
আসক্তের চোখে অহিংসা ব্যর্থ তরিকা-
বলে স্মিত হেসে চোখ বুজলেন বুদ্ধ!  
তবুও নিরঞ্জনায় নিষ্কাম প্রেমে,
আমরা দুজনে হইনি কি পরিশুদ্ধ?


(৫)
দুইটি বিড়াল অন্ধকারে লাফিয়ে উঠলো-
বারান্দায়,
ভাবছো কষ্ট তোমার ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে কিনা?
আমার দুঃখ দাঁড়কাকে খায়,
উঠোন ছাড়িয়ে বাঁধিয়েছে যে-
রাস্তায় বন্যা!  


(৬)
শ্যাওলায় লেখা শপথ গুলো হচ্ছে কি পুরাতন?
টাকের আভাস ব্রহ্মতালুতে, কুঞ্চিত মৃন্ময়ী,
অন্ধ হোমার নিয়তির হাতে বাঁধল সকল চরিত্র,
তবুও এখনো মনুর পুতেরা হতে চায় বিজয়ী!


(৭)
স্থপতির মতো নকশা গড়েছি রাতজাগা মন্তরে,
রাণী হবে মৎস্যকন্যা যদি পাও-
শূন্যের উদ্যান?
কি যে চাও তাই তো বুঝিনা! কে মেরেছে বাণ!
পাগলের মতো ছুটছি শুধু বুড়ো শহরটার,  
এপার ওপার!
এখন তো বেশ ভালোই বুঝেছি,
নিজেকে কেন নেকড়ে ভাবত নেবুচাদনেজার!


(৮)
ফাঁকে ফাঁকে তাকাও; চোখে হরিণীর চাহুনি?
চাও কি অভয় আরো;
ভয় কে করেছো প্রাণসখী!
ভাবলাম চত্বর থেকে-
সুমেরীয় ফুল আর গল্প কিনি,
হঠাত আকাশে দেখি খেচরের মতো তীক্ষ্ণ নজর,
সর্বদা পাহারায় রাখো প্রেম;
তুমি প্রণয়ের বাজপাখি!      


(৯)
ওই দেখো নারী বলতে না বলতে-
এসো গেলো দাবানল!
পাখির পালক পুড়ে যাবে বলে,
অচিন কষ্ট মুড়ে নেশাতুরা হলে!
অথচ আমার কাছেই ছিল সমস্ত দমকল!
আমিই কি তবে নিশাচর হায়েনা?
পুরূষ তো অস্থির, সামান্য তর সয়না!


(১০)
বন্ধ করেছি হাজার দুয়ারী,
তবুও থরথর কাপছে এই অন্তঃপুর!
যদিও জানি লাভ নেই কোন,
গেটেতে ঝুলিয়ে মস্ত তালা!
আয়ুটা যে ভাই আস্ত কর্পুর,
খাদকের মতো খেয়ে করছে শূন্য,
অষ্টব্যঞ্জনে ভরা থালা!
জীবন মানেই তবে কি শুধু শুধু,
অকারণে উবে যাওয়া?


(১১)
তুমি আমি রাজা রানী পাশে- শুয়ে ভাবি,
এতোটা দূরে কেন সবই?
একটা স্রোতস্বিনী আছে ঠিক- মাঝামাঝি;
সেতুর পিলার টেকেনা সে খরস্রোতে,
তাইতো সে ঘূর্ণিতে নামেনা শিকারে,
সমুদ্র বিলাসী মাঝি!
একথা বুঝতে হয়না তো হতে,
দার্শনিক অথবা কবি!


(১৩)
ইন্দ্রের ঐরাবত চান্দেরে ঢেকে দিলে,  
মেঘে, উত্তুরে ক্ষ্যাপাটে বাতাসে,
খুলে দিয়ে বুক, বলেছি আকাশে,
এসো আমার এথেনা! এসো আফ্রোদিতি!
হুট করে তুমি এলে চোখ ভরা জল,
আমিতো তাতেই স্বর্গ পেয়েছি,
তুমি সর্বময়ী হলে কি হতো এমন ক্ষতি?


(১৪)
প্রাচীন ভাস্কর্য প্রবীণ বৃদ্ধের মতো ছিল ধ্যানে,
ভাবলাম শুনে আসি কোন গুপ্ত জ্ঞান তারা জানে?
বলো-
'আমার ভিতরে আর কোন সত্তা থাকে চুপিসারে?
বজ্র নিনাদ এলো- মূর্খ তুই!
ভাংগালি কেন রে ভাই হাজার বছরের ঘুম?
ওই যে দেয়ালে দেখিসনি ঝুলানো আয়না!
ওখানেই নিজেকে দ্যাখ,
কাচা ঘুম ভাংগিয়ে করিসনা ভুতুড়ে কোন বায়না!


(১৫)
শুনছো নাকি! এই যে, আকাশ বাড়ির মেয়ে,
তোমার জন্য সূর্যমুখী; চোখের মাঝে কষ্ট কিসের?
প্যান্ডোরার বাক্স খুলে কবে থেকে হলে দুঃখী!
আকাশ বাড়ির মেয়ে কিছুক্ষন চেয়ে,
বললো- 'জানোনা তুমি কষ্ট সেতো সর্বব্যাপী!'
সবার চোখেই বেধেছে বাসা অল্প বা বিস্তর,
জলপট্টি দিয়ে বুঝি তুমি নামিয়ে রেখেছ জ্বর!
আমি আসার অনেক আগেই,  
কে পরালো দুঃখ কাজল?  


(১৬)
শুকনো ঘাসে আলতা ছড়িয়ে,
সবুজ আইলে, কোথায় হারালে অরুণিমা?
ছটফট করে দেখে পেটকাটা সন্ধ্যার ঘুড়িরা,
ভাবলাম শোক করি;
সেটাও হলোনা পুরোটা করা,  
প্রতিটি বিচ্ছেদই নাকি মুক্তির স্লোগানে ভরা!


(১৭)
সকাল বেলা ক্যালকুলাসে বিকেল বেলা কোয়ান্টাম,
হিসাব মেলেনা, ভালোতো বুঝিনা! তত্ত্ব মিশে ঘোল,
প্যাঁচ লেগেছে সমীকরণে অদ্ভুত সব প্রশ্ন কিনে,
প্রেমিক কেন পাগল হবে? প্রেমিকা কেন বিনোদিনী?
যে যারে চায় তারে কেন পায়না পুরো নির্বিবাদ?  
প্রশ্ন শুনে অনিশচয়তায় পড়ে গেছেন হাইজেনবার্গ!


(১৮)
নাবিকের সাথে কি কখনো ডুবেছে শঙ্খচিল?
আমিতো তোমার সাথেই ডুবেছি,
সাগরসংগমে!
ডুবুরীর সাথে ডুবে গেলো কিনা মর্ত্যের অণুজীব,
হিসাব রাখেনা কেউ তার লগবুকে,
তবুও আমি ডুবেই গেলাম তোমার গন্ধ শুঁকে!    


(১৯)
আমিতো ভালোই থাকি আজকাল,
খানিকটা জলের মতো গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ি!
মাঝে মাঝে অবসরে,
ভিজাতে আসে তৃষ্ণার্ত ঠোঁট পুরাণের পাখি!
নাকি কোথাও আসলে নেই কেউ,
শুধু ছলনাময়ী তুমি চলে আস অগোচরে!


(২০)
সোনার আপেল মধ্যে গড়ায়,
লোভে ঝিকিমিক রমণীর চোখ!
আমি কে ভাই বিচার করার-
আফ্রোদিতি-এথেনা-হেরার?
প্রেমলালসায় কার শরীর,
দিচ্ছে কতো ইলেকট্রিক শক?
এই মরণশীলের কপালে তো-      
জুটবে শুধু দাহ্য নরক!