অন্ধকারকে নিয়ে অনেক বেশি নাড়াচাড়া করি বলে,
আলোরা কি পালিয়ে গেলো?
আজকাল নিঊজ চ্যানেলে বলে,
যাদুর প্রদীপ ঘষা দিলে দৈত্য আসেনা আর,
সেও মানুষের মতো ভাড়া খাটে মজুরীর বিনিময়ে!
দানবেরা অজ্ঞাতবাসে গিয়েছে,
মানুষেরা কবে থেকেই নিজের আড়ালে লুকিয়ে পড়েছে!
এখন শুধু অন্ধকার আছে! কি নিয়ে ভাবব বলোতো?
সব নশ্বরতাকে অতিক্রম করে মহাযুদ্ধেরা অমর-
হলোনা তো!
ম্যানিফেস্টোর দাম্ভিক শব্দরা বলেছিল-
মৃত্যু মানে অমরত্বের সোপান! কি সুতীব্র মিথ্যা,
একশো বছর ধরে করে যাচ্ছি পান,
এখন বিষক্রিয়ার সময়!
সাঁজোয়া যানের উপর বসা সৈনিক ভেবেছিল-
ফিরবে আবার বাড়ি!
স্ট্যালিনগ্রাদের আকাশে সাদা সাদা বকপাখি দেখে,
ভেবেছিল ফিরে যাবে; তবুও হয়নি ফেরা!
নরম্যান্ডির উপকূলে তার লাশ পড়ে আছে,
চেনাই যায়না! বিচূর্ণ খুলিতে স্বপ্নেরা সমাহিত,  
মানুষেরা বুঝি এভাবেই মরে যায়?
সেগুনের বনে, পলাশের লালে, সাভানার ছায়ায়!  
দার্জিলিং এর শীতল মলের কোণায় কোণায়,
মরে থাকে ধুতুরা ফুলের মতো সাদা সাদা বক!
অশ্রুত রাগিণীর সাথে নুপূরের শব্দ প্রভাতী বেদীতে বাজেনা
দিনের শেষে,  
প্রাচীন মৃত্যু খড়গের মতো দেবীর হাত থেকে খসে এসে,
গলার কন্ঠনালী কেটে সব করে দিল সাফসুতরো,
সেই একই মঞ্চে সবাই নিহত হয়েছিল কিংবা হবে,
আজ কাল পরশু অথবা পরের দিন পরাভূত যৌবনে!  
তবু মাঝে মাঝে উড়ে গেলে বকপাখি,
কলমির লতাটা অজান্তে দুলে উঠে কিশোরীর মতো,  
দুই একটা শিশিরের ফোঁটা গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ে,
অনাদৃত গুল্মের আস্তরণের উপর!
আজো কিছু যাযাবর ঘাসফড়িঙের শরীরে সবুজ ছিটা দেখে-
ভাবে ফিরে যাবে বাড়ি! আসলে কি বাড়ি আছে?
নীলের মত্ত স্রোত থেকে আড্রিয়াটিক সাগরের ডোবা মন্দিরে,
কোথাও তো ছিলনা ঘর,
ছিলনা নিজস্ব পাখি কাকডাকা ভোরে!  
বিস্মৃত স্মৃতিতে জাহাজ ভরা লাশের স্তূপ নিয়ে,
আমরা প্রতিনিয়তই পলায়নরত!
আমরা এখনো দ্রুতগামী যুদ্ধবিমানের মতো,
পলায়নরত!
তবুও অরূণা সাহারার গুহায় উন্মত্ত স্বপ্ন এঁকেছি জানো,
ছোট্ট ঘরে নাচানাচি করছে প্রমত্ত গঙ্গা!
লোভনীয় চাঁদটা চিরকালই শিকার সীমার উর্ধ্বে ছিল,
খাঁচায় আটকাতে পারিনি কখনো!
তবু এখনো কাব্যের পংক্তিতে তাকে রাখি বেঁধে,
শুধু তোমার জন্য!