মিশে যাওয়া বাড়িটার মাটিতে বাস করে তোমার শরীরের ঘ্রাণ!
আজো জ্বলে অরূণার চোখে মণি; ভীরু হরিণী খোঁজে বকফুল।
পার হয় বহু শতাব্দীর ঢেউ, অদৃশ্য জানালায় তবু উড়ে তার চুল,
কালো পর্দায় আঁকা দৃশ্যের আনাচে কানাচে বেঁচে আছে অরূণা!  
হয়তো সে গান গায় সাজানো বীণাতে; হাসি তার নূপুরের টঙ্কার,
গালে পড়া টোল নিয়ে খেলা করে রাজহাঁস আর পুকুরের জল,
আমরা বুঝি না তা! টের পায় বায়বীয় ভ্রমরের একান্ত প্রিয় ফুল,
থোকা থোকা সাদা ফুল ঝিরিঝিরি পাতাদের প্রিয় গল্পের ফাঁকে,
অরূণাকে ডাকে! মঙ্গলকাব্যের মাঙ্গলিক সুরে অরুণাকে ডাকে!  
মিশে সে গিয়েছে সবুজ গন্ধের মতোই গালিচার ঘাসের শরীরে।


প্রথম ভোরের দিনে দাঁড়ানো ঘোড়ার পাল, মনে পড়ে তোমার?
উদ্ধত যুদ্ধাংদেহী সারি বাঁধা টেরাকোটা; তারা মরে গেছে সবাই।  
কথা দিয়ে বহুবার ফিরে আসি নাই, কান্নার ছোপ নকশী কাথায়,
অসমাপ্ত জীবনের আশা বুকে নিয়ে আজো বেঁচে আছে অরূণা!
মন্দিরের পুরানো বেদীতে কান পেতে শুনি আরণ্যক দীর্ঘশ্বাস,
দুর্বোধ্য হায়ারোগ্লিফিক্সের অর্থশূন্য দুঃখবোধ ধাক্কা দেয় ঘণ্টায়,
প্রত্নতত্ত্বের ছেঁড়া প্রাসাদের বেঞ্চে বসে আমি অপেক্ষায় থাকি ঠায়,  
এখনো অরূণা কথা বলে; পোষা ময়নাটা আর নেই পুর্ব দেয়ালে,
তার কথাগুলো বেঁচে থাকে অস্তিত্বের বাতাসে, অদৃশ্য নিঃশ্বাসে!