প্রতিদিন প্রাতঃরাশে নৈশভোজে আমার হৃদপিণ্ড-
ছিড়ে খায় আগ্রাসী শকুন; একপাল ধারালো নখরে,
তারপর ওমে ঢেকে ঘুমায় লক্ষী-প্যাঁচার মতো,
নিপাট ভদ্র সেজে; সংশয়ে থাকে যাবতীয় যাযাবর!
কোন সংবাদে শিরোনামে পাবেনা এই আঘাতের খোঁজ,
তবুও হৃদয়টাকে পুরানো কাগজে, পরিত্যক্ত কাপড়ে,
আনাড়ি দর্জির মতো জোড়াতালি দিয়ে চালাচ্ছি কাজ!
বলেছিল জ্যোতিষ ছায়াপথে নক্ষত্র মেপে, ওরা খাবে,
প্রতিদিন ছিঁড়ে খাবে মাংস ঘিলু হাড়; নিয়তি তোমার,
পালিয়ে বাঁচবেনা কোনমতে যাই নাও সাজ!
যতোবার শরশয্যা ছেড়ে উঠি আরেকবার বাঁচার নেশায়,
যুদ্ধরত মুখোমুখি আর্টিলারির গর্জন; মুহূর্মুহূ বাজ!
আমিতো মিত্র পক্ষে নেই! চিনিনা শত্রুপক্ষের কোন মুখ,
অজাতশত্রু হয়ে জন্ম মর্ত্যে, তবু জাহান্নামে নির্বাসিত,
অজগরের মতো আষ্টেপৃষ্টে রেখেছে বেঁধে অশুভ অসুখ!
বিনা দোষে ক্ষত-বিক্ষত! আকাশে শকুন,
হৃদপিন্ডের খোঁজে ক্রূর চোখে জ্বালিয়ে রেখেছে আগুন,
কোথায় পালাবো বলো? ঠিক খুজে নিবে আহত অন্তর,
প্রাতরাশে নৈশভোজে! নৈসর্গিক নির্মমতায় নির্ঘুম ভোর!


মাঠে ঘোত ঘোত করে একদল অতিথি শূকর,
কালো মাটি খুঁড়ে কচু ঘেচু খোজার অভিনয়ে রত!
কি নিঃখুত অভিনয়! আমার কষ্টেরা এম্ফিথিয়েটারে,
বসে হো হো করে হাসে! তীব্র যন্ত্রণা খেলে শরীরের-
ভিতরে! মনে হয় পুড়াচ্ছে মস্তিষ্ক কেউ পাশবিক আগুনে,
আসলে ছিড়ছে এই বুকের পাঁজর দিবালোকে প্রতিনিয়ত,
উৎক্ষিপ্ত ধমনীর রক্ত লাল নয় নীল! আমার পাঁজর-
বুড়ো নারকোলের মতো ফাটে ফটফট!
একটি শিম্পাঞ্জি উঁকি দিয়ে বলে-
'আহা অকারণে কেন করো ছটফট! ওরা তো তোমার-
উঠোনের পরিচিত! গৃহে পালিত শূকর!'
মুখ চেপে মুখোশের তীব্র চিৎকার শুনছে না কেউ,
পৃথিবী বধির নাকি আমিই ভিক্টোরিয়ান মূদ্রার মতো-
হয়েছি অচল! তবু যন্ত্রণা গ্রাস করেছে আপাদমস্তক!
কষ্ট পাই, স্বপ্ন গুলো অকালে গর্ভপাতের মতো,
নষ্ট হলে, ক্ষোভে সবকিছু ফালাফালা করে দিতে গিয়ে,
ভেসে যাই পচা পাঁকে! পদতলে রাস্তা ছিলোনা,
শুধু ক্ষুধার্ত হাংগরের মতো ছিল সারি সারি ম্যানহোল!
আর কতো যন্ত্রণা দেবে অসমাপ্ত আঘাত?
প্রতিটি মুহূর্তে অলংকৃত কাঁচের গ্লাসের মতো,
টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছি মিশে মসৃণ পলির কাদায়,
কে এমন দিচ্ছে ধাক্কা হঠাৎ? জানা নেই উত্তর তার!
বিছানার ঘুমে বোবায় চেপে ধরে মুখ বলে হয়ে উন্মুখ,
জাগরণে স্তব্ধ যদি, কন্ঠ খুলিস কেন ঘুমের প্রাসাদে?
চুপ থাক! চুপ থাক!
কষ্টে পুড়ে হলে হবি খাক! তবু চুপ থাক!