বহুদিন তোমার সাথে দেখা হয়না আর,
এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে কয়েকটা দিন,
কয়েক বছর!
ক্যালেন্ডারের পাতার লাল জলের রঙে,
মিলেমিশে হয়েছে একাকার,
দেখা অদেখায় জমাট বাঁধা মনের খবর।
পলাশের বনে ফুটছে বৃথাই কৃষ্ণচূড়ারা,
লাল ঢেউয়ে দিনের হিসাব হচ্ছে সারা।
তোমার সাথে এখন আর হয়না দেখা,
আগের মতো ইচ্ছে হলেই,
খুব গরমে ঠাণ্ডা জলের রেস্তোরাঁটায়!


এখনো ঝিরিঝিরি বাতাসেরা খেলা করে,
মেহগনি জারূলের সাথে।
আকাশটা পড়ছে গলে সরিষার ক্ষেতে,
হলুদের বুকে জ্বলে নীল আলোর ফোয়ারা!
বহুদিন হয় নাই দেখা তোমার সাথে,
যাযাবর পাখিদের মতো কাঁধে ছুঁয়ে পাখা।

বহুদিন হলো হয়েছে গত,
আমাদের শেষ সাক্ষাতের দিনক্ষণ!
কালপুরুষের অবয়ব মিশে গেছে অসময়ে,
সপ্তর্ষি মন্ডলের ছায়া ঘেরা দেওয়ালে।
একটি তারকা মণ্ডল অতিদ্রুত যাচ্ছে মিশে,
অবয়বে আকারে অন্য মন্ডলের সাথে!
চিনতে পারেনা কেউ তাদের আগের মতো,
বদলেছে পুরো আকাশের মানচিত্র।
কতোদিন দেখা নেই আমাদের দুজনের,
তাই তারা গিয়েছে ভুলে,
নিয়মের কঠিন নিষেধ!


বহুদিন হয়ে গেলো দেখা হয়না আমাদের!
পৃথিবীর সমস্ত ক্রোধ নাকি মরেই গিয়েছে,
কোন এক বিপর্যস্ত সকালে!
তাদের আত্মারা মিশে আছে,
শ্বেতপাথরের সমাধির নীচে পিচ্ছিল মাটিতে।
সবগুলো ভালোবাসা ঝরণার মতো,
ফুল হয়ে ঝরছে তো ঝরছেই,
মোঘল দূর্গের পাথরের সাজানো বাগানে!
শুধু তোমার আমার দেখা হচ্ছেনা বহুদিন,
রেখেছি কুড়িয়ে ঝরা ফুলগুলো,
নার্গিস, লিলি, জেসমিন আরো কতো।
দেখা হলে তোমাকেই দিতাম এই উপহার,
ভালোবাসার অমূল্য দলিল যতো!


নদীগুলো ম্যানগ্রোভ বনদের বুক চিড়ে,
চিত্রা হরিণের চোখ জলের ভিতর নিয়ে,
আনে বড় বড় স্রোত!
নৌকায় হয়না পার এখন সে অকূল পাথার!
কালো ঢেউ তুলে তারা আত্মহনন করে,
ঝাঁপ দিয়ে মোহনায় বিশাল সাগরে,
শুধু একবার অন্তিমে দেখা মিলবে বলে,
এ এক আত্মাহুতি প্রেমিকের মতো!
শুধু তোমার আমার দেখা হচ্ছে না আর,
তাদের মতো!


এখনো গাছেরা মিথ্যা আশ্বাসে,
আকাশকে ছুঁতে গিয়ে জোনাকির রাতে,
চাঁদটাকে পাওয়ার আস্পর্ধায়,
বছরের প্রতি রাতে তাকিয়ে কাটায়,
অন্তহীন ছায়াপথে নিতান্ত একাই!
শুনেছি তাদের পাতা এখন ছুঁয়েছে আকাশ,
নক্ষত্রেরা এসেছে নেমে ঘাসের জমিতে।
তবু এখনো হচ্ছেনা দেখা তোমার আমার!
পাখিদের ডানা ঝাপটানো শব্দেরা,
হারাচ্ছে নিরক্ষীয় বনের গভীরে,
পৃথিবীর বিষুব রেখায় নিঃস্তব্ধতার বসতি।
তুমি আমি বসে আছি বহুদূরে একা একা,
বহুকাল হয় নাই দেখা!