এক বিকেলে সুরমার তীরে
যেখানে চাঁদনীঘাটের সিঁড়ি
ঘাড় ফিরিয়ে অবাক বিস্ময়ে দেখি
ঠায় দাঁড়িয়ে আলী আমজদের ঘড়ি।
শতাব্দি পাহারায় ক্লান্ত ঘড়ির কাঁটা
কর্তব্যের খাতিরে তবু জানিয়ে দিলো
এখন সন্ধ্যা ছ’টা ।


তাড়া নেই মম ফিরে দেখি নদে
সুরমার জল কলকল রবে অবিরাম চলছে ছুটে।
কান পেতে শুনি-
ফিসফিস বলাবলিঃ
বুকভরা জল নিয়ে কোথায় যাচ্ছো গো চলি ?
ডুবায়ে নুপুর, ভিজায়ে কাঁকন
ভাসিয়ে দু’কূল
হারায়ে ফেলেছো বুঝি তব নাক ফুল ?


খানিক দূরে- রূপোর চেয়ারে দেখি
বাদাম চিবোয় একজোড়া।
তাচ্ছিল্যভরে ফিরালো মুখ দেখিলো যবে
ব্যাগ কাঁধে ঠুঙা কুড়াতে আসা এক জীর্ণশীর্ণ ছোড়া।
আরাম কেদারায় শীতল বাতাসে
সন্ধ্যা উপভোগ করে
হিসেব কষছে যেন একে অপরের হাতখানা ধরে ।


আলো-আঁধারির ছলে
সুরমার জলে মিটিমিটি হাসি
ওপারে ফেলিলে চোখ কানে ভাসে অন্যকিছু ।
সুইপার কলোনী মাঝে
চেঁচামেচি রবে রাতের আয়োজন ।
একঝাঁক নেঙটা শিশু আর-
শুকরের পাল পাশাপাশি, গাদাগাদি
শান্তির নীড়
এতটুকুই যেন জীবনের প্রয়োজন ।


এপারে অদূরে-ঝলমলে আলো
দামী-দামী গাড়ি
সরকারি বাঙলোতে যখন-তখন
অফিসার আসছে, যাচ্ছে গাড়িতে চড়ি।
ব্যস্ত সময় রাষ্ট্রীয় জরুরী কাজ
বুঝেও বুঝেনা তারা কখন যে বেলাশেষে
ঘনায়ে এসেছে ধরাতে সাঁঝ ।


কত কিচ্ছা, কত ঘাত-প্রতিঘাত
সংগে গাঁথিয়া নিয়া
কলকল রবে সুরমা তবু যায় ছুটে
দুই তীরে হাতছানি দিয়া ।