পুরাকালে ছিল এক প্রজাপ্রিয় রাণী,
বর্ণন করিব আজ তাহার কাহিনী।
নারী প্রজাগণ যেত রাণী দরবারে
তাহাদের সমস্যা বলিবার তরে।
একদা কহিল তারা, ‘‘চাই প্রতিকার
নারী-পুরুষ চাই সমানাধিকার।
সন্তানের জন্মদান করে পিতা-মাতা,
প্রসব-যন্ত্রণা ভোগ করে মাতা একা–
পরিবর্তন হোক এই অন্যায় বিধান,
নারীকুলে রক্ষ মাতা, দাও হে নিদান।‘‘
রাণী কহে, ‘‘এ বিধান স্বয়ং বিধাতার,
দেব দ্বারে রাখিব বার্তা সবাকার।‘‘
দেবভক্ত রাণী যায় রাজবাড়ী মন্দিরে,
নারী  প্রজা অভিলাস  নিবেদন করে।
মৃদুহাস দেব কয়,‘‘তথাস্তু, বাছা !
অচিরে পূর্ণ হবে তব মনোবাঞ্ছা ।
জন্মদাতা হইবে অর্ধেক ভাগীদার
গর্ভধারিনী মাতার প্রসব বেদনার।‘‘


বৎসর পরে রাণী সন্তান-সম্ভবা,
যন্ত্রণাকাতর রাণী আসন্নপ্রসবা,
সংবাদ দিতে দাসী যায় দরবারে,
সেথা রাজা ব্যস্ত রাজকার্য তরে।
রাজা কহে,‘‘শীঘ্র যাও রাজবৈদ্য পাশে,
রাজবৈদ্য গৃহে দাসী অবিলম্বে আসে।
প্রাঙ্গণে শায়িত এবে রাজবৈদ্য কহে,
‘‘উদরে বেদনা তীব্র, যাত্রা সম্ভব নহে;
রাণী পাশে ধাত্রী লয়ে যাও শীঘ্র তবে,
ধাত্রী  দ্বারা রাণী মাতা সন্তান প্রসবে।‘‘
রাণী কাহিনী হইতো এখানেই ইতি
যদি রাণী না যাইত মন্দিরের প্রতি।


অশৌচান্তে রাণী যায় পুনঃ মন্দিরে,
দেব কহে,‘‘ মনোবাঞ্ছা কহ, ভক্ত,মোরে‘‘।
রাণী কহে,‘‘ফিরাইয়া লও তব বর, হে প্রভু‘‘
দেব কহে,‘‘জানিও, বিধাতা পক্ষপাত করে না কভু।
আমার বিধান নারীর মান রক্ষা তরে,
স্বাধীনতা, গোপনতা দেয় তাহারে।
চিরাচরিত বিধি বলবৎ আবার,
প্রসব-বেদনা শুধু নারীর অধিকার।‘‘
              —০০০—