ছেলে বেলায় পাখি পোষার নেশা কার না থাকে।আমারও ছিল।খুব ইচ্ছে ছিল একটি টিয়ে পাখির বাচ্চা পোষার।কিন্তু কে দেবে আমায় টিয়ে পাখির বাচ্চা।নানিদের নারিকেল গাছে বছরে যে কয় বারই টিয়ে বাচ্চা ফোটাত গ্রামের বড় ছেলেরা রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যেত।আর তখন আমি এত ছোট ছিলাম যে কেউ বিশ্বাস করতো না আমি পাখি পোষতে পারব।তাই হাজার বার চাইলেও কেউ তেমন কর্ণপাত করত না আমার কথায়।পাশের বাড়ির আমার চেয়ে দুই তিন বছরের বড় ছেলেরা যখন চুরি করা টিয়ের বাচ্চা গুলোকে নিয়ে ঘুরে বেড়াত আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম সেই টিয়ের বাচ্চার দিকে।হালকা সবুজ পালক আর লালচে ঠোঁটে ভীষন সুন্দর লাগত বাচ্চা গুলোকে।এরপর নানি বাড়ি ছেড়ে যখন আমি আমাদের বাড়িতে চলে আসি তখন বাবাকে খুব করে ধরি আমাকে একটা টিয়ের বাচ্চা কিনে দেয়ার জন্য।একদিন বাবা ঢাকা যাবেন শুনে তাকে বলে দেই যে সে যেন অবশ্যই আসার সময় আমার জন্য টিয়ে পাখি কিনে আনে।তখন ভাবতাম ঢাকায় সব পাওয়া যায়।মানুষ যা চায় সব সেখানে আছে।তো পাখির আশায় আমার রাতে ঠিক মত ঘুম পর্যন্ত হয়না।শুধু মনে হয় এই বুঝি বাবা এল।অবশেষে দুইদিন পর বাবা এল।সাথে নিয়ে এল রাবারের তৈরী খেলনার দুইটি টিয়ে পাখি।বাবাকে বললাম তোমাকে না বলছি সত্যি সত্যি (আসল) টিয়ে পাখি কিনে আনতে?নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে এল।আর মনে মনে ভাবলাম আমার বাবা এত বোকা কেন!