তোমাকে দেখেছি সাত সকালে
যখন পুবের আকাশ ঘাম ছিলো
তরল আলোয়।
ছ্যতলা  ধরা পুকুর পারে
বাঁধানো সিড়িতে বসে চিকন চুলের গোছা খানি
উল্টে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলে  নিজস্ব কায়দায়।


অনন্ত পিপাসায় পুকুরের শ্যওলার মতো
আমিও দেখেছি তোমাকে বার বার
অকারণে দেখার একটা আলাদা  স্বাদ যেমন।


রুপোর তোড়ায় বাঁধা তোমার পায়ের পাতা
ডুবিয়ে ছিলো সবুজ জলে,
অলজ্জ জল তোমায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে সুখ পেয়েছিলো
অধিকার আঁকড়ে রাখার মতো
আর বাকি মানুষের মতো সেদিন আমারও ঈর্ষা হয়েছিলো।


রোজ তোমায় দেখে চোখ জুড়িয়েছি
চোখ জুড়ানোর আড়ালে আমার বুক পুড়েছিলো'
অনেক দিন পর হদিশ পেয়েছিলাম।


তোমার দু পায়ের নিচে রাঙ্গা পথের
আলতা ধুলো লেগে লেগে আকাশ হয়েছিলো
অবান্তর  চঞ্চল তোমার নুপুরের ছন্দে  
উলসে দিয়েছিলো আমার শরীর।


ছোটো ছোটো রোদ বৃষ্টি খুব সাবধানে
বাঁধা শাড়ির আঁচল খুলে
জোড়া পদ্নের নির্জন সরোবরের খোলা ঘাটে
দেখেছিলাম আমার বাসা বাড়ি।


সময়ের মতো আমিও চলেছিলাম দ্রুত ঢালা অন্ধকারের বুক নিংড়ে
তোমার চিবুকে উগরে থাকা বাতাস গন্ধ মাধুরী
ঠিকরে পড়েছিলো  আমার শরীরের পোশাকে,
মধু লগ্ন সন্ধার চৌকাঠে থমকে এসে দাঁড়িয়েছিলো ।
তোমার মৌন ইশারায় চাঁদ ধুয়েছিলো,
তার দু চোখ তোমার গা ভেজানো পুকুর জলে হারিয়েছিলো নিজেকে সেই অতলান্তে।


রূপ লোভাতুর পলকহীন আমার দু চোখ
ডুবেছিলো পা নাচানো জল তরঙ্গে।


এখন দেখতে পাচ্ছি
সূর্য সপ্ত রাঙ্গা বর্ণচ্ছটা নিঃশেষ করে ঘূমিয়ে পড়েছে
পৃথিবীর সবুজ পালঙ্কে।
আর
আমি এখন একা।


বিকাশ দাস
মুম্বাই