কবিতা, তুমি কী প্রজাপতি?
          না’কি আঁধার রাতে শিউলি তলে থোকা থোকা জোনাকি বাতি!


কবিতা, তুমি চোখ ঝলসানো-হরিৎ সরষে ফুল?
           না’কি শিরিষের ছায়ায় কিশোর রাখালের বাঁশির সুর!


কবিতা, তুমি ষোড়শী তন্বীর কুন্তল ফণা?
          না’কি সুডোল গড়নে জোড়া পাহাড় উন্নত বক্ষ স্তন্য যুগল!


কবিতা, তুমি কি জীবনানন্দ, ঘাস ফড়িং, দোয়েল?
          না’কি মাঝ সমুদ্রে অ্যালবাট্রস,শঙ্খচিল!


কবিতা, তুমি কাশফুল--অবিরাম ময়দান?
          না’কি ধু ধু বিরানময় মরুভূমি, শূর্ণতা!


কবিতা, তুমি সমুদ্র ফেনা, বাতিঘর?
          না’কি কলকল হিম ছড়ি ঝর্ণা, ছল-ছলাৎ বয়ে চলা!


কবিতা, তুমি সুনীল আকাশ, নীলিমায় সাদা মেঘ?
  না’কি অপার দিগন্তে শেষ সূর্যের ম্লান হাসি!


কবিতা, তুমি ফসলের মাঠ, মায়ের নোলক?
          না’কি বোনের কাঁখে ভরা কলসি!


কবিতা, তুমি তপ্ত উনুনে গটগট ভাতের হাড়ি?
          না’কি দাদার পাতে দুধ কলা ভাত সুরৎ সুরৎ!


কবিতা, তুমি কি পৌষের সকাল, মিষ্টি রোদ?
          না’কি উদাস দুপর, বিরহীর গোপন আত্মদহন!


কবিতা, তুমি  রিনিঝিনি বৃষ্টি, মেঘ বালিকা?
          না’কি উল্কা, বজ্রপাত!


কবিতা, তুমি ভাটি দেশের টান?
          না’কি ভাওয়াই সুরে গান!


কবিতা, তুমি অলস বিকেলে মায়াবী রবীন্দ্র, প্রেমময়ী গান?
           না’কি নজরুল- বিশ্ব জগত আপন মুঠোয় পুরে দেখার হুংকার!


কবিতা, তুমি কি ধান কুড়ানী বালিকার ঝোলায় পুড়া সোনা ধান
  না’কি তপ্ত দুপুরে ঝি ঝি পোকার কান ফাটানো ঐকতান!


কবিতা, তুমি কি ব্যস্ত শহর, কোলাহল?
          না’কি রাত দুপুরে নির্জন গাঁও-গ্রাম!


কবিতা, তুমি থাকো কি সর্বময়ী শহুরে অভিজাত পাড়ায়?
          না’কি সর্বহারা বস্তিতে তোমার বাস।
                                    
                              (২৭/৫/১৩, টেকনাফ)