কোন শব্দের কী বানান হবে তা নিয়ে যত না স্ট্রাগল করছি তার চেয়েও বেশি বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে টাইপ করতে গিয়ে ভুল বানান সম্মুখে চলে আসা।নাতিদীর্ঘ ব্লগীয় জীবনের  বাংলা বানান এবং বাংলা টাইপিং নিয়ে কখনো  খুব একটা স্বস্তিতে ছিলাম না, এখনো নেই।আর এই দুর্ভোগ সৃষ্টির কারণ মূলত বাংলা কী বোর্ড ব্যবহার না করা। প্রথমেই বলে রাখি বাংলা কীবোর্ড ব্যবহার করে বাংলা লেখার প্রচেষ্টা কখনো করা হয়নি বিধায় এর দায় মাথা পেতে নিতে মোটেই কার্পণ্য করছিনা।এই দায় মেনে নেয়ার কারণগুলোও অনেকটা বাস্তব প্রেক্ষাপট থেকেই উত্সারিত।১৯৯৩ সালের শুরুতে সর্বপ্রথম কম্পিউটারের সংস্পর্শে এসে বাস্তব প্রয়োজনের নিরিখে ইংরেজি টাইপ শেখার আগ্রহটা অনেক গুন বেড়ে যায়। সেই থেকে বাংলা কী বোর্ড ব্যবহার করে বাংলা টাইপ শেখার ইচ্ছাটুকু আর জাগেনি।


মাঝে মধ্যেই আমার মনে একটি প্রশ্ন জাগে আমি মাতৃভাষায়  যে বানানটি  লিখছি তা ভুল না শুদ্ধ তা বুঝার সঠিক উপায়টা কি ? হাস্যকর এই প্রশ্নটি অনেকের কাছে হাস্যরস সৃষ্টি করলেও আমার নিকট সর্বত্রই  কৌতূহলী মনে হয়েছে এবং আমি এই নিয়ে  বেজায় মুশকিলেও পড়েছি।


উপায় তো একটা আছেই । বাংলা অভিধান খুলে দেখে নিলেই তো সব চুকে যায়। অভিধানে শব্দের অর্থ এবং বানান দুটোই একসাথে পাওয়া গেলেও একাধিক যুক্তাক্ষরসহ র-ফলা,য-ফলা দিয়ে কঠিন বানানগুলোর জন্যে বারবার অভিধান খুলে দেখে নেয়াটাও বেশ কষ্টসাধ্য এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যেমন উচ্ছৃঙ্খল,মুহুর্মুহু, অগ্ন্যুৎপাত এই জাতীয় বেশ কিছু বানান লিখতে গিয়ে হোচট খেতে হয় অনেক সময়। এইটি একটি উদাহরণ মাত্র।


আমার মত নবিশ ব্লগাররা  বানান জানেননা এই কারণেই যে বানান ভুল হয় তা কিন্তু নয় ।অনেক সময় দেখা যায় একটি সাধারণ বানানও ভুল করে ফেলি যা কোনো ভাবেই হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় । অসাবধানতা বা অসচেতনভাবে লেখার কারণে  সহজ বানানও ভুলের তালিকায় থেকে যায় ।যে কোনো ভাষায় লেখালেখি করা হোক না কেন বানান ভুল থাকাটা শুধু দৃষ্টিকটু-ই নয় অমর্যাদাপূর্ণ এবং বিব্রতকরও বটে।এছাড়া এতে মাতৃভাষায় শব্দ ভাণ্ডারের অপ্রতুল জ্ঞানও প্রকাশ পায়। এই দায়ভার  অবশ্যই কবি / লেখক/ ব্লগারের স্কন্ধেই বর্তায় ।


বাংলা ভাষায় বানানের ক্ষেত্রে ভেজালটা কোথায় হয় বেশি ? বানানের ক্ষেত্রে গোলমালটা হয় বেশি, ণত্ব আর ষত্ব বিধানে এটা সবাই জানে। এর পরেও ভুলের মাত্রা থেমে নেই। শব্দের মাঝখানে কিংবা শেষে ‘ন’ দেব, নাকি ‘ণ’ দেব তা নিয়ে দ্বিধায় পড়তে হয়।যেমন: ধরন ও ধারণা  বানানে যথাক্রমে ন ও ণ হবে। 'তুমি কোন্ ধরনের লোক, সে ব্যাপারে আমার ধারণা আছে'। এই সহজ বানানগুলোই বেশি ভুল হয়ে থাকে এবং আমিও করে থাকি।এটাই হলো অসাবধানতা যা কখনই কাম্য নয়। তবে ভুলের বহরটা  'ই'- 'ঈ' নিয়েও কম নয়, একই সাথে এর চিহ্ন নিয়ে অর্থাৎ কোথায়  "ি"  এবং "ী" বসবে। এছাড়া উ/ঊ-কার, য-ফলা, য-ফলা আকার, শব্দের শেষে য-ফলা, তিন বা চার বর্ণের সংযুক্তি ইত্যাদি।


চলবে...