চড়াইয়ের গান থামেনি এখনও..
(---"অন্তর কান্দে
বাহির বান্ ধে....)
কুমুদ বললে,
"তুমিও কাঁদছ মৈত্রেয়ী?"
"কই না তো"
মৈত্রেয়ী চোখ মুছতে চাইল,কুমুদ বাধা দিয়ে বললে,
"না মৈত্রেয়ী,
ভেলার নীচের অকুল জলধি তোমার চোখে আশ্রয় নিয়েছে।
বয়ে যেতে দাও
ভেলা ভাসুক
অসীমতায়"
মৈত্রেয়ী মুখ তুলল,
চোখের পাশে অবহেলায় হেলে পড়া ওর রুক্ষ চুলগুলো সরাতে চেয়ে কুমুদ আবার বললে,
"কি ভীষণ লাবণ্যময়ী লাগছে তোমায়
ভরা জ্যোৎস্নায়
সিক্ত দু চোখ স্ফটিক স্বচ্ছ
মৈত্রয়ী তোমাকে এত সুন্দর কোনোদিন দেখিনি"
এক ঝটকায় কুমুদের দুই হাত সরিয়ে দিয়ে মৈত্রেয়ী বললে
"স্পর্শ কোরো না ও চোখ
আত্মাকে স্পর্শ করতে নেই
তুমি শান্তি পাবে না
ব্যথার চোরাবালি থেকে মুক্তি পাবে না
লোভ তোমা থেকে দূরে যাবে
বিদ্বেষ যাবে আরও দূর
তুমি স্বাধীনতা হারাবে কুমুদ
নিঃসংশয় পাপ করবার স্বাধীনতা
অনুতাপহীনতার স্বাধীনতা
পৃথিবীর চৌকাঠে একা হয়ে তুমি
জন্মান্ত প্রতীক্ষা করবে...."
মৈত্রেয়ী শেষ করতে পারল না।
অস্ফুট মেঘে ছেয়ে যাওয়া চাঁদে মৃদু আলোর আলোড়নে
বানভাসি মহানন্দার স্থির অথচ হিল্লোলের গাম্ভীর্যে পরিপূর্ণ
কুমুদের ঠোঁট ততক্ষণে স্পর্শ করেছে তার দুচোখ
"আমি পরাধীন তোমার কাছে"
" নাহ্! তুমি মুক্ত ধ্রুবতারা
ভিক্ষার ঝুলি সগর্বে দিয়েছ ফেলে
আত্মকে বরণ করে ঠাঁই যে দিলে অন্তরে
আজ তুমি তোমা দেহের যোগ্য সম্মান পেলে। "