খুব সুন্দর সকাল ছিল আমার।
তুলনা যার কোথাও খুঁজে পাই না।
প্রতিদিন ভোরে চড়ুই পাখি
ঘুম ভাঙ্গিয়ে যেত।
চারিদিকে অবিরত ফুলের সুবাস, শীতল বাতাস,
পাঠাভ্যাসে রত পাঠশালার ছাত্র,
মৃদু গুঞ্জন সর্বত্র। কাশা আর উলুধ্বনি,
মন্ত্র উচ্চারণ, মায়ের সূত্র পাঠ,
সুমধুর আজানের সুর
বহু দূর থেকে ভেসে আসত।
খুব সুন্দর সকাল ছিল আমার।
তারপর একদিন-
আজন্ম লালিত স্বপ্ন সাথে নিয়ে
সুখের সকাল বিসর্জন দিয়ে
ঘর ছাড়লাম স্বপ্নীল স্বর্গ গড়ব বলে।
অনেকটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিলাম।
যে আশায় মরুদ্যানের খোঁজে
মুখ বুজে সহ্য করেছি তপ্ত দহন
তৃষ্ণার্থ মন খুঁজে ফিরেছে এক আঁজলা জল,
শীতল ছায়া, সুস্বাদু ফল;
সকলই হয়েছে বিফল।
পুরোটাই মরীচিকাময়।
প্রাপ্তি কিছু নয়,
শুধু অবক্ষয় চেতনার পরতে পরতে।
অবশেষে আশাহত, হতাশায় নিমর্জিত এই আমি
আবারও সুন্দর সকালকে খুঁজলাম,
চিৎকার করে কাছে ডাকলাম।
সে আর আসেনি কখনো।
তোমরাও কেউ খোঁজ রাখোনি আমার,
না আমার সোনালী সকালের।
অতঃপর মধ্যাহ্নের তীব্র তাপ,
কখনো বিষন্ন বিকেল,
কখনোবা অমাবস্যা রাত,
কখনো গাঢ় মেঘে আচ্ছন্ন আকাশ,
শুধু বসবাস বৃত্তের ভেতর।
একান্ত নির্জনতায় যন্ত্রণার ঘুনপোকা
মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো কুটে কুটে খায়
আর যন্ত্রণায় অস্থির করে তোলে।
স্মৃতির অশরীরী আত্মারা
ঘুরে চারপাশে।
সব কিছু ভুলে-
আমি প্রতীক্ষায়,
হারানো সকাল যদি আসে।