কত দূরে গেলে?
থিতু কি হয়েছো কোথাও?
এখনও চলছো পথ আকাশের 'পরে?
এ'ক'টা বছরে কতটুকু গেলে?
হায়, এ' অনন্ত বিশ্বে কতটুকু যাওয়া যায়!
যেখানে আলোকবর্ষে হিসেব কষে
পৌঁছা যায় না কোন কুল কিনারায়।
কোথায় বা যাবে? কোথায় হারাবে?
এখনও কি আছো তুমি আকাশগঙ্গায়?
কতদূর এন্ড্রোমেডা আর?
নাগাল কি তার পেতে দেরি আছে?


রেখে গেলে যা তুমি জীবনের কাছে-
আজো তা দীপ্তা সঞ্চিত আছে।
হারিয়ে যাওয়ার আগে নীলে,
তিলে তিলে সাজানো সংসার,
সবগুলো তার তেমনই রয়েছে ;
কোথাও একটু আধটু ধুলো পড়ে গেছে।
সহজে কি কিছু বদলায়?
তুমি শুধু চলে গেলে বড় অবেলায়।
এখনও নিয়ম করে ঋতু আসে,
ভালবাসে, ধরাকে সাজায় থরে থরে,
গ্রীষ্মের পরে শ্রাবণধারায় স্নাত হয়
স্মৃতির বাগান।
মন-প্রাণ ডুবে যায় বিষন্নতায়,
আর আমি পথ চলি উষ্ণ হাওয়ায়।
তোমার রেখে যাওয়া দু'চোখের জল
করে টলমল হৃদয়ের হ্রদে।


মাঝে মাঝে মনে হয় ক্ষণে ক্ষণে তুমি-
খোঁজ নাও, কখনও ব্যাকুল হয়ে জানতে চাও-
কেমন আছি?
কেমনে বাঁচি?
এ বড় দুরূহ উত্তর।
তোমার এঁকে দেওয়া বৃত্তের ভেতর
কাঁদে অন্তর। চারিদিকে দুর্ভেদ্য প্রাচীর।
অনুভূতির নিরন্তর ছোঁয়ায়
পাথরের প্রাণ প্রতিষ্ঠায় প্রাণান্ত আমি।
পৃথিবী দেয়নি ছুটি-
অযুত নিযুত কোটি মুহূর্ত যায়
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষায়,
বলতে- বিদায়।


কত দূরে গেলে?
কান পাতলে আজো কেন শোনা যায়,
সকাল বেলায়, 'এই ওঠো!'
আমাকে জাগাবার চিরচেনা ডাক,
কখনওবা খুনসুটি, রাগ।
এখনও বাতাসে ভাসে সুমিষ্ট হাসি,
তোমার গায়ের গন্ধ এ ধার ও ধার,
তুমি কি রয়েছো তবে এখনও এ পাড়?
তোমার পায়ের শব্দ এ ঘর ও ঘরে,
পর্দার 'পরে নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যায়।
কখনও চমকে উঠি-
আমার ছায়ার মাঝে তোমার ছায়ায়।
সব কিছু ফেলে-
কত দূরে গেলে?
বলো দীপ্তা, কত দূরে গেলে?