ভালো ছিল দিন গুলো; পড়শি আপনের আদরে, না থেকেও ছিল সব      
ভালোবাসায় ভরা দিন ছিল, ছিল না স্বজনহীন জীবনের একাকীত্ব নীরব।    


বার্ষিক পরিক্ষা শেষে শীতের আমেজে নতুন হাত-পা গজাতো
খেঁসারির ক্ষেতে, কাঁচা পাকা কুলে, ঘূঁড়ি আর নাটাইয়ে দিন কাটত  
কঞ্চির উইকেটে তক্তার ব্যাটে সুতলির বলে ছক্কা; মাঠ পার সপাটে    
মারবেল, ডাংগুলি, লাট্টু, শিকগাড়ি, কিতকিত, পিট্টু ও হত দাপটে
রোদ্দুরে পিঠ রেখে উঠোনে চলত লুডো, বাঘবন্দি ও যেত না বাদ  
চাঁদের আলোয় লুকোচুরি, বউ বসন্তি, বাঁচার আনন্দে ছিল না খাদ।    


গরম মুড়ি আর খেঁজুরের রসে প্রাতরাশ, আহা - সকালটা উঠত জমে
কখনো সুগন্ধি চালে রসভাত, বড় থেকে ছোট ভরত না পেট  কমে  
কাঠের উনুনে নতুন আলু পোড়ার গন্ধ,  আর কোথা পাই সেই স্বাদ  
পান্তার সাথে ভাজা চিংড়ির সঙ্গত - আহা, অম্বলে হত না দিন বরবাদ        
রবিবার সকালে কালমেঘ ছিল বাঁধা, কাঁসার ঝিনুকে পরিমাণ হত মাপা
খেলেই পাওয়া যেত মিছিরির এক ঢেলা, ঠাকুমার হাতেই থাকত রাখা  
পেট ভুটভুটে মিলত চুনের জল রাতে, সামলে যেত সব কবিরাজি মতে
সর্দি জ্বরে শিউলির রসে আদা, সোমরাজের এক দানা পেট ব্যথা সারাতে।    


ভালো ছিল দিন গুলো; পাড়ার সবাই ছিল স্বজন,  না থেকেও ছিল সব    
ভালোবাসা ছিল শাসন ছিল, ছিল না আপন পর, আমার আমার কলরব।    


সোনারপুর
৬/৬/২১