স্কুলের ছুটির শেষে পিছনে ধাক্কা খেয়ে
পড়ে গিয়ে রক্তাত হয়েছিলাম, চোখে আগুন নিয়ে উঠে  
খুঁজেছিলাম, কে ধাক্কা দিয়েছে, মুখচিত্র দেখে
মা দৌড়ে এসে মুখে হাত চাপা দিয়ে, বলেছিলেন
সোনা... কিচ্ছু হয়নি, বাজে কথা বলতে নেই।  


ঠাকুরের নারকোল নাড়ু চুরির দায় পড়েছিল ছোট্ট পিঠে
কাঁদতে কাঁদতে বলার চেষ্টা করেছিলাম, আমি করিনি
কেউ শোনেনি সে কথা, বলার চেষ্টা করেছিলাম কারো নাম
তখনো কাকিমা এসে চোখ মুছে দিয়ে বলেছিল
সোনা..., ঐ রকম বলতে নেই।  


কৈশোরে খেলতে খেলতে অন্যায় ভাবে মারখেয়ে  
যখন প্রতিদ্বন্দ্বী কে মাটিতে ফেলে মারতে উদ্যত হয়েছিলাম
তখনো পাড়ার কাকু এসে ছাড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন
তুমি তো ভালো ছেলে, এমন করতে নেই।


পরীক্ষার হলে টোকাটুকিতে নাম জড়িয়ে ছিল
প্রধান শিক্ষকের ঘরে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম
প্রধান শিক্ষক বাবা কে ডেকে পাঠিয়ে ছিলেন
বাবা বলেছিলেন শিক্ষকের সাথে তর্ক করতে নেই।


খেলার মাঠে রেফারির অন্যায় পেনাল্টির প্রতিবাদের ফলে
লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল
ক্লাব সভাপতির উপদেশ, এমন প্রতিবাদ না করলেই চলত
পরের খেলায় রির্জাভে রাখা হয়েছিল।


বসের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পুরস্কার
প্রমোশন পিছিয়ে গিয়েছিল  
উনিয়নের নেতা বলেছিল, না বোল্লেই পারতে
পাড়ার দাদার অন্যায় দাবীর সাথে আপোষ না করলে
হুমকির শিকার হতেই হয় পরিবার পরিজনদের।


প্রতিবাদ হীন সত্তাই  ভালোর প্রথম শর্ত
প্রতিরোধ হীন মানুষ সকলের কাছে ভালো
ন্যায় বিচার চাওয়া অন্যায়ের থেকেও বড় অপরাধ
গণতন্ত্রের চানাচুর স্বাস্থ্যকর না হলেও গিলতেই হয়
মেরুদণ্ড সোজা রাখার স্বাদ কোন কালেই মধুর নয়
এই বাক্যগুপ্তির সাথে যে মানুষের পরিচয় নেই
তাদের কথা শুনতে নেই, বলতে নেই ... বলতে নেই।    


সোনারপুর
২৫.১০.২০১৯