এই কোথায় থাকিসরে খোকা ?
এক সহ যাত্রীর প্রশ্ন, ট্রেনের গেটে দাঁড়ানো কিশোর কে
কি করিস, থাকিস কোথায়, তোর নাম কি ?
কিশোরটি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, পাশে দাঁড়ানো যুবার দিকে
প্রশ্নগুলো তার কিশোর অনুভুতি কে ছুঁয়ে যায়, তবু চুপ থাকে
হয়ত সে ভাবছে, এমন কথা কেউতো শুধোয় নি আগে
কিছুটা সময় যায়, শহরতলীর আর একটি স্টেশন আসে, ট্রেন থামে
দুড়-দাড় করে কিছু মানুষ ওঠে-নামে, সেও সরে দাঁড়ায়
কিরে কি বোল্লাম তোকে, অস্ফুট স্বরে সে কিছু একটা বলে
যুবাটি বলে, সেটা কোথায় ! কিশোরটি চুপ করে থাকে
সেতো জানেনা, নামটা হয়তো শুনে থাকবে কোন ভাবে।।


যুবাটি আবার শুধায় কোথায় যাবি ?
কিশোর উত্তর দেয়,  আগের স্টেশনে
তারপর কোথায় যাবি? ফিরে যাব উল্টো দিকের ট্রেনে
তারপর ? আবার এদিকে চলে আসব, উদাস ভাবে বলে
তুই কি করিস ? মাথা নেড়ে না এর কথা বলে
যুবাটি ওর দিকে তাকিয়ে থাকে, বলে যাবি--আসবি ? মানে...
মাথা নাড়ে কিশোরটি - জানায়  হ্যাঁ
ফেরিওলা হাঁকে, ও দাদা, মচমচে বাদাম-ভুজিয়া, পাঁচ টাকা
কিশোর টি তাকিয়ে থাকে, আর একজন শুধোয় তোর ক্ষিদে পায়!
সে নির্বিকার ভাবে মাথা নেড়ে জানায় - হ্যাঁ।।
পাশের দু-একজন যাত্রী বলেন, ও হয়ত স্টেশনেই থাকে
কিশোর টি মাথা নাড়ে - হ্যাঁ ।।


নানা রকম আলোচনা সহযাত্রীদের,
যে যার মত বলে চলে, কিশোরটির ভ্রুক্ষেপ নেই সেদিকে
কেউ বা শুধায়, এই তুই পড়িস ! মাথা নেড়ে জানায় - না
অনেকে কটু , অনেকে দার্শনিক, অনেকে ভবিষ্যতের মন্তব্য করে
তবু কেউ দিলনা পাঁচ টাকার বাদাম, ট্রেন পরের স্টেশনে দাঁড়ায়
কিশোরটি নিস্পাপ মুখে নেমে যায়, হাত নাড়ে সহযাত্রীদের প্রতি
হয়ত সে বোঝাতে চায় - কথা রেখেছে
হয়ত জানিয়ে গেল - বাবু গো কিছুই হবেনা আমাদের
তোমরা তো কাটিয়ে গেলে এত গুলো বছর, কেই বা ভেবেছে
দেহ-পোজীবিনির দুয়ারের মাটি তো তোমাদের চাইই।।