দু মাসের শিক্ষায় জয় যা কিছু শিখেছে, তাতে গুরু সন্তুষ্ট, অন্য শিক্ষার্থীদের বলে  
জয় মাথানিচু করে শোনে, যদিও জানে না এ শিক্ষা কি কাজে আসবে কোন কালে  
শিক্ষা শেষে জয় বাবুর বাড়ি ফেরে, গুরুর কথা মাথায় রেখে, অভ্যেসে রেখো
ব্যবহার না হলে সড়কিতে মরচে পড়বে, বাবুকে জানিও একথা, কাজে থেকো
শহরে মানুষের মধ্যে একটা চাপা ভাব, বুঝতে পারে না জয়, হয়ত মনের ভুল
দুধ কেটে গেলে যেমন জল আলাদা হয়ে যায়, ভরা নদী যেমন ফুঁসে ভাঙে কুল  
বাবুর বাড়িতে আরো তিনজন নতুন পালোয়ান, চিলে কোঠায় তাদের থাকার ব্যবস্থা  
নিচের ঘরে যা ছিল তাই, রামু বলল তোমার উপর বাবুর ভরসা, কিযে হবে অবস্থা
সকালেই বাবু ডাক দিলেন জয়, চিলে কোঠায় দাঁড়িয়ে বললেন দেখে নে ঠিক করে
কোনটা কখন লাগবে, সেই মত রাখার ব্যবস্থা কর, কিছুটা রাখবি নিচে তোর ঘরে  
তৈরি থাকতে হবে, ভিতরে কেউ যেন না ঢুকে পড়ে, দিনে রাতে থাকবে না ফাঁক
সতর্ক থাকবি, জিজ্ঞাসা নয় ব্যবস্থা নিবি, তুই দলপতি নির্দেশ দিতে নয় রাখঢাক।


জয়, বাবুর সব কথা মন দিয়ে শোনে, কিন্তু কি ঘটতে চলেছে বুঝতে পারে না
দুপুরে খাবার পরে রামুকে জিজ্ঞেস করে, রামু বলে ভায়া গন্ডগোলের আঁচ পাও না    
তুমি তো গেরামের ছেলে, বয়স কম, বাবু যেমনটা বলেচে সেগুলো মাথায় রেখো
তুমি যাবার পর তিন পালোয়ান এয়েচে, ভায়া তোমার পরীক্ষে এবার, সজাগ থেকো
জয় বলে রামুদা ইট আছে ? রামু বলে আছেতো, ঐ নাওয়া ঘরের পিছে ভাঙা গোটা
তক্ষুনি রামুকে বলে চল আমার সঙ্গে, একবার দেখিয়ে দাও, শুয়ে বসে হোচ্ছ মোটা
রামু মাদুর থেকে শরীরটা তুলে বলে আচ্ছা চলো, তুমি ভায়া যুব ছোঁড়া, দলপতি
আমাদের বয়স হয়েছে, পেট বেড়েছে বাবুর খেয়ে,  ভাবি কালের তোমরাই গতি
জয় রামু কে বলে একটা হাতুড়ি আর দুজন লোক লাগবে, খানিক সময়ের জন্যে
রামু বলে যাই বলো ভায়া আমি কিন্ত পারবনি, কয়লা ভাঙার হাতুড়িটা দিচ্ছি এনে  
জয় কাজে লেগে পড়ে, আদলা, একপোয়া আধপোয়া করে ইট ভেঙে জড় করে
সন্ধের আগেই ভাঙা শেষ, হাতুড়ি রেখে  কয়লার ঝুড়িতে ভাঙা ইট গুছিয়ে ভরে  
সুখরাম পালোয়ান কে ডাকে, আনপোড় ভাষায় বলে এ ঝোড়া চিলেকোঠা লে রাখ
জী... ঝোড়া মাথায় সুখরাম; আগে জয়, ছাদের কোনে জড়ো করে রাখে ভাগে ভাগ
নিচে মন্দিরে শোনা যায় সন্ধ্যা আরতির ঘণ্টা, মাথার উপর সন্ধ্যার আকাশ কাজ ও শেষ    
রাস্তায় দূরে দূরে লোহার খুঁটিতে বাতি, জয় ছাদে দাঁড়িয়ে দেখে, বাঃ নিচটা তো বেশ।        
    
সোনারপুর
২৬/০১/২০২২