ঘরের দেওয়াল গাঁথা শুরু হয় জোর কদমে, চার বন্ধু উদয় অস্ত খাটে
মাসের মধ্যেই দেওয়ালের কাজ শেষ, বহু কাজ এখনো বাকী বটে
নিধি গোলাম মিস্ত্রি কে পাঠিয়ে দেয়, ঘর তৈরির কাজে তার পাকা হাত    
দুই হপ্তার মধ্যে ঘরের ছাওন সারা, এক অজানা আনন্দে কাটে দিন রাত
কেউ মাটি সমান করে পানি ছড়ায়, কেউ বা পিটে পিটে সমান করে কাদা
দাওয়ার চারদিকেই হেতাল গরানের বেড়া বাঁখারিতে শক্ত পোক্ত বাঁধনে বাঁধা  
লেপা পোঁছার কাজ চলে, ফাঁকে ফাঁকে চার বন্ধু তে চলে মজার হাসি ঠাট্টা
মাঝে মাঝে মিতে নিধি আসে, তখন আরো জমে ওঠে, হয় ভরপুর আড্ডা ।


একদিন নিধি বলে মিতে, উঠোনে মাটি দে উঁচু করলে ভালো হবে বেশ
সব বন্ধুরাও সায় দেয়, মাটি ফেলা হবে উঠোনে, ঘরের কাজ হলে শেষ  
ঘরের মাটি কাটার জন্য অনেকটা গর্ত হয়েই ছিল, মাটি ফেলার কাজ শুরু হল    
দেখতে দেখতে জায়গাটা আরো গভীর হয়ে বেশ একটা পুকুরের আকার নিল
ঘরের দখিনে উঠোন, পুকুর,  চার পাশে আরো অনেকটা জায়গা বাগানের মত
হরি ভাবে নতুন মাটিতে ফসল হবে ভালো, লাগাবে বীজ;  সাথে এনেছিল যত।    
ধার্য সময়ের মধ্যেই ঘরের কাজ শেষ, সকলের মনে বেশ আনন্দের রেশ
হরি নিধি কে বলে, মিতে সবাই মিলে নদী ঘুরতে গেলে লাগত বেশ।


কথাটা নিধির মনে ধরে; বলে আচ্ছা, ঝোড়োকে বলি, ওর সঙ্গেই যেতে হবে  
নদী খালের পথ ওর সব জানা, ওকে বলে দেখি নৌকো পাওয়া যাবে কবে
হরি বলে; মিতে বজরা হলে ভালো হয়,  ওতে কত জন যাওয়া যাবে  
নিধি বলে হ্যাঁ ঠিক, বজরা হলে ভালো, ওটায় হাত পা ছড়িয়ে জন দশ হবে
গৌর বলে নৌকো কি জঙ্গলের মধ্যে দে যাবে! হরিণ বাঘ সব দেখা যাবে !
নিধি বলে হ্যাঁ মিতে, ঐ তো নদীর ওপারে ঘন জঙ্গল, মনে হয় দেকতে পাবে।  
নিধি সুযোগ বুঝে বাবুকে জানায় সব, বাবু বলে বুঝেছি,  বাঘ দেখতে চাস !
পারবি সামলাতে তোরা ছোকরার দল, বেসামাল হলে নিস্তার নেই, সর্বনাশ
ঝড়ো কে বলে দ্যাখ, তার সময় হবে কিনা, নদী পথ; জঙ্গল ওর সব জানা
তবে পুবের দিকে গভীরে না যাওয়াই ভালো, ওদিকেই বেশী হয় বাঘের হানা।


সোনারপুর
০১.০৯.২০২০