কোন ভূতেতে এলিরে তুই মোদের এমন দুঃসময়ে    
ভাবলি না তুই চাষা ভুষা গাঁয়ের কথা, এ তুই কেমন মেয়ে  
কর্মাভাবে অর্থাভাবে ক্লিষ্ঠ হাঁড়ি চড়ছেনা রোজ হেঁসেল ঘরে
ভুখা পেটের রোষানলে বাতাস ভারী, সুখ গিয়েছে দূরে সরে  
কদিন আগে শেষ হয়েছে চাষের কাজ, ধান পাকতে অনেক বাকি
মাছ ধরে আর শাপলা তুলে কাটছে দিন, দুটো মাস বেশ কষ্টে থাকি
রঙচটা সব মলিন পোশাক, লজ্জা ঢেকে কোনক্রমে বাঁচাই মান
আঁধার তবু ছিল ভালো, এই সময়ে আলোর মালা করল বেমানান।  


রামচন্দ্র রাজার ছেলে, সে বুঝবে কেমন করে গাঁ গঞ্জের কষ্ট কথা
রাবন বধের ধুয়ো তুলে অসময়ে ডাকল তোরে, প্রচার পেল তোর গাথা      
যুদ্ধ হল রাজায় রাজায়, রামচন্দ্র পেল জয়, গাঁয়ের গরীব পেল কি
বাড়ল দুঃখ, অশান্তি ঘরে ঘরে, বুঝলি না এটুকু তুই ! দক্ষের ঝি  
সেজে গুজে এলি বটে দারুন সাজে, বাবুদের বড় বড় মণ্ডপে
ঘরে কাঁদে ছেলে মেয়ে নতুন পোশাক চেয়ে, ফেললি কি ঝঞ্ঝাটে
অভাবি দেনার বাড়ে বহর, আড়তদারের আঙুল ফুলে কলাগাছ
নয় টাকার মাল ছয় টাকায় রফা,  ক্ষেতের ধান পুকুরের মাছ ।  


তুই নাকি মা সর্বভূতে মহামায়া, মন্ত্রে তন্ত্রে পুরানে তেমন লেখা
রাজ রাজ্যেশ্বরী, আলোর দিশা, কাল শ্রেষ্ঠা শান্তিরুপে দিস দেখা
দুঃখ হরণী, সৌভাগ্য দায়িনী, ছায়া দায়িনী, শক্তি দায়িনী মাতৃ রুপা
গরীবে দিলি না কণামাত্র তার; কোন অপরাধে রাখলি করে অভাগা
এ কেমন ছলনা তোর, পড়লি বাঁধা সুখের নীড়ে স্বার্থের স্তুতিতে
মন যে আমার দেয় না সায়, শাস্ত্র কথায় তুই নাকি মা সর্বভূতে ।
  
সোনারপুর
০১.০১০.২০১৯