( এই লেখাটি অত্যান্ত সাদা মনের নিরীহ, দরিদ্র, নিরক্ষর, নির্লোভ, প্রান্তিক চেনা অচেনা , আধুনিক শহুরে সভ্যতার থেকে দূরের মানুষ গুলোকে উৎসর্গ করলাম। এদের কাছে যে আদর, আত্মীয়তা পেয়েছি তা ভোলার নয়। কথায় কথায় জেনেছিলাম এদের কি ভাবে ঠকানো হয়। সেই পটভূমিতেই এই উপস্থাপনার উৎসাহ পাই।)    


আচ্ছা জগা, বুঝলি বটে মানে গুলা, ঐ সুলোগানে যা বুলছিল
আমিতো বুলেই গেলাম জুরে জুরে,  কানে যা ঢুকছিল
আরে মাধো, তুই পাগলা বটে, খুঁজিস কেনে সবের মানে
মিছিল মিটিং এ ও সব বুলতে হয়; ঐ লেতারা সব জানে।


আমরা সব মুখ্যু মানুষ, অত কথা কী বুঝতে পারি! বিদ্যে লাই  
কথা গুলা মনে লাগে বটে “ কেউ খাবে আর কেউ খাবেনা,
তা হবে না – তা হবে না, মজুতদারের  কালো হাত
ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও, শ্রমিক কৃষক ভাই ভাই সবার পাতে
ভাত চাই, সবার জন্য ঘর চাই, আলো চাই, আরো কী সব চাই “।  


এ মাধো,  ছাড়িদে ও সব কুথা, গেল হপ্তায় কাম পাইছিস ! বল
মেম্বার বুলেছিল কাম দিবে, দেয় লাই, খাতায় টিপ লিয়ে
দুশো টেকা দিল, বুলে দিল পরে আসতে, মেছিন ছিল বটে
বুলেছিল; উচ্ছে গেরামের রাস্তা হবেক, কাম লাগবেক দু-হপ্তা  
সব উয়াদের দয়া, মেছিনে খরচা কম, কা্মে লাগে আচ্ছা।


মোর বউ-টো বুলছিল, উয়াদের গেরামের বুধো মাস্টর ভালো বটে
গেরামের মেয়ে মরদের কাম দেয়, মেছিন লাগায় না মোটে
পুরো টেকা দেয়,  দু হপ্তা কাম পায় মাসে মেয়ে মরদ সব্বাই
রাস্তা হছে, কুয়া বনাইছে, ইটের ঘর দিছে, বুলছে আলো আসবে  
ই-গেরামে মোরা মার খাইছি, ভাবি চলি যাব, পারা গেরামের দিকে।  


এ জগা, চল কেনে দিখে আসি, ঐ মাস্টরের লাগে কুথা বুলে  
মুদের যদি কামে লাগায়, ঘর বানাই লিব উ-গেরামে
ই-গেরামে কাম লাই, হাতে টেকা লাই, সব ঐ মেম্বার খাই লিছে
দেখিস লাই, সুন্দর পানা ইটের ঘর বানাইছে ইস্টিশানের পিছে  
এ মাধো, একুন থাম বটে,  ঘরে কুথা করে তুকে বুলব  পরে।


তুকে বুলে রাখি জগা, মিছিলে আর লাই, জঙ্গলে যাব পালাই
মিছা বুলে লিয়ে যাবে, একবেলা খেতে দিবে, কাম দিবেক লাই
হারামী গুলা গরীব মারছে; দরদ করে মুখে মুখে, ভোটের লাগে
বুড়া মারাঙের দিব্যি বটে, উদের বেটা বেটির ভালো হবেক লাই।
  
সোনারপুর
১১.০৬.২০২০


সুলোগান > স্লোগান, বুড়া মারাং > আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপাস্য দেবতা।