[কবিতাটি আদিবাসী প্রতিবন্ধী কন্যাটির জন্য উৎসর্গকৃত]


ওরা কি ভবিষ্যতদ্রষ্টা, সব কিছু আগে ভাগে বুঝে যায়।
একজন রিকশাওয়ালা, মুটে,একজন ফেরিওয়ালা
ওরা কি অনেক জ্ঞানী,বেশি বুদ্ধি ধরে,বাস্তব-জ্ঞান সম্পন্ন
ওরা কি ভবিষ্যত দেখতে পায়।
কেমন করে ওদের সাথে মিলে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সংখ্যালঘু সম্পর্কিত গবেষণা রিপোর্ট।
-
আমি তো চলে যেতে পারি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে,
নিদেন পক্ষে সীমান্তের ওপারে, আমাদের খন্ডিত ভূমিতে!
কিন্তু কেন যেতে হবে,পিতা-পিতামহের বসত-ভিটা ছেড়ে?
আমি তো জন্মেছি এই বাঁশঝাড় ঘেরা শনের ছাউনি গৃহে
আমার পূর্ব পুরুষের বুকভরে নেওয়া শ্বাস, কত দীর্ঘশ্বাস  উঠোনে ছড়িয়ে আছে, কত শত সহস্র মায়াময় স্মৃতি।
-
তুলসি বেদি, শিউলি তলায় ঝড়ে থাকা ফুল
নিকনো আঙিনায় কত উৎসব;অন্নপ্রাশন,গায়েহলুদ বিয়ে, পূজা-পার্বন, বড়ো বড়ো কাঁসার পরাতে,বড়ো বড়ো জামবাটি ভরে,কাঠের বারকোস ভরে বিলানো হয়েছে প্রতি পূর্ণিমায় প্রসাদ ফলমূল,মিষ্টান্ন,লুচি-নাবড়া, খিচুড়ি বেগুন ভাজা নাড়ু মুড়ি মুরকি সন্দেশ কত রকমারি পদ
দশ নম্বর কড়াইতে উথলে উঠেছে দুধ
মহল্লার সবাই ভাগাভাগি করে পরম তৃপ্তিতে গ্রহন করেছে সেই সব ফলার আহার।
কাঁসর-ঘন্টা,বাঁশি,ঢাক নিয়ে বাদ্যকর ঘুরেছে উঠান থেকে উঠানে।
-
তখন আমাদের কোন ধর্মের আড়ম্বর ছিল না,
সম্প্রদায় ছিল না, গোত্র ছিল না।
নির্ভরতা ছিল শুধু ফসলের মাঠ;
রেষারেষি ছিল না, বাক-বিতন্ডা ছিল না,
ছিল ফসলি মাঠের স্বপ্ন,
উর্বর ফসলের জন্য স্বপ্ন ছিলো শুধু,
তখন আমরা মানুষ ছিলাম, আমরা কৃষক ছিলাম ;
এখন তুমি বলছো আমার ধর্ম আচার আচরন সব ভিন্ন,
আমাকে ছাড়তে হবে এই ভূসম্পত্তির মালিকানা,
এ ভূমি আমার নয় !
-
পিতা-মাতার সম্মুখে প্রতিবন্ধীকন্যাকে করছো বলাৎকার !


ইন্দিরা রোড,ঢাকা
১৫/১০/২০২০