বুকহীম করা শব্দ তুলে 'রাস্তা দাও, রাস্তা দাও' বলে
চলে গেল এম্বুলেন্স -
আমি তেরো তলার উপর থেকে বেলকনির রেলিং গলিয়ে চোখ রাখলাম রাস্তায়, খুদে খুদে মানুষের সারিতে,
মাথার ভেতর চোরা স্রোতের মতো ঘুরপাক খাচ্ছে
অজস্র অমীমাংসিত প্রশ্ন-
আচ্ছা, এম্বুলেন্স যাকে বহন করে গন্তব্যে নিচ্ছে,
সেকি পুরুষ? নাকি মহিলা?
তার সঙ্গে চলছে কতো মানুষের, পরিবারের, ঘনিষ্ঠ জনের হাসিকান্নার স্মৃতি-
এই মানুষটি পুরুষ হলে এখনো কি তার কোনো দায়বদ্ধতা আছে?
কন্যার বিবাহ, গৃহনির্মাণ ঋণ, হ্যারিয়ার জীপের ঋণ, ব্যাংকের কাছে?
সন্তানকে বিদেশে পাঠানোর কোনো প্রতিশ্রুতি?
সহধর্মিণীর কাছে করা কোনো প্রতিজ্ঞা?
মানুষ কি সব কাজ গুছিয়ে নিতে পারে পরিকল্পনামাফিক, অসুস্থ হওয়ার আগেই?


আচ্ছা এম্বুলেন্সটা কি এতোক্ষণে পৌঁছাতে পেরেছে
কোনো আরোগ্যসদনে, কিংবা নার্সিংহোমে?
যদি পৌঁছিয়েই যায়, ডাক্তার কি তাকে ডায়াগনোসিস করে চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছে?
নাকে অক্সিজেন মাস্ক, হাত ফুঁরিয়ে স্যালাইন-
তার মধ্যে কোনো স্টেরয়েড বা কোনো ডায়াজেপাম ইঞ্জেকশন?
নাকি সব কিছুর আগে নেবে কয়েক সি.সি. রক্ত-
অথবা ঢোকাবে সিটিস্ক্যান মেশিনে?
তারও পরে একটা মরফিন, যাতে নিস্তব্ধ হয়ে থাকে রোগীটি সুবোধ বালকের মতো?
তারপর অপেক্ষা রিপোর্টের.....


থাক, অন্যের এসব চুলচেরা বিশ্লেষণে আমার কোনো লাভ নেই!
হাইরাইজ বিল্ডিং থেকে আমি বরং দেখি তিলোত্তমা নগরীকে-
নতুন গজিয়ে ওঠা বড় বড় শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স বিল্ডিং,পাক খাওয়া ফ্লাইওভার,সোডিয়াম বাতির সারি-
আহ্, আমি তো ভালোই আছি- আমার এ তিলোত্তমা নগরীতে!