আমাকে ভালবেসো না
বিপ্লব দাস
আমাকে ভালোবেসো না।
আমাকে ভালবাসলে সূর্য জ্বলে যায়–
আমাকে ভালবেসো না।
আমাকে ভালোবাসলেই
ফুলেরা ঝড়ে যায়
মিনার ঘরে মোমবাতি পুড়ে যায়।
তুমি কি শুনবে না ওগো–
ওগো শুভ্র - মন - ময়ূরী
রিনিঝিনি ঝর্না বওয়া ভালোবাসা দিও না।
বারণ করছি!
আমাকে ভালোবেসো না
আমাকে ভালোবাসলেই
শিশুরা পড়া ভুলে যায়
জ্যোৎস্না মেঘের কাছে ধরা দেয়।
এ জীবনে আর ভালোবেসো না শুভ্র মন ময়ূরী
আমাকে ভালোবাসলেই–
আকাশ কালো হয়ে যায়
অঙ্কুর স্বর্ণালীর আলো পেয়েও থমকে দাঁড়ায়।
হায়! একি ভুখা পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি ?
তুমি আর হোয় না আমার প্রহরী।
চাই তোমার ভালোবাসার থেকে ছাড়পত্র–
প্রতিমার মত জড়িয়ে ধরো না এই দীর্ঘরাস্তায়।
পালক তুলেই দেখবে ছাইভস্ম।
চেয় না শুধু ভালোবাসা এই কাঙ্গাল,
কঙ্কালের কাছে ।
আমাকে ভালোবাসলেই
বারুদগ্রস্থ হওয়াই ভিখারীদের মুখশ্রী পুড়ে যায়।
প্রেমিকার প্রেম ধুলোয় লুটে যায়।
পাখিরা গন্তব্য ভুলে যায়।
এ অগ্নিপিন্ড ব্যথায় জর্জরিত আমি ।
একফালি কাপড় ছিঁড়ে গিয়েছে উত্তাপে ।
আমাকে ভালোবেসো না–
আমাকে ভালোবাসলেই
নববধূকে খায় না চুমু তার প্রণয়।
মায়ের প্রদীপে তেল থাকে না
দেবতারা ফুল পায় না চরণে–
আর কলঙ্কিত করোনা জোড় হাত তোমার পায়ে ।
অনাথ শিশুরা রাত কাটে ফুটপাতে
শ্রমিকের কুঁজো পিঠের পঙ্কজ ফোটে ধনীর ফ্ল্যাটে।
চাষীর চেতনায় ভুখা দেশ যাবে রসাতলে ।
আমাকে ভালোবেসো না–
ভালোবাসলেই
কবি - কবিতা না লিখে
কালি মাখবে লজ্জায়,
শিশির কনার মত ঝড়ে যাবে–
জল পতিতার শাড়ির বেদনায়।
আমাকে ভালোবেসো না–
আমাকে ভালোবাসলেই
এই উলঙ্গ পৃথিবীকে গিলে খাবে অন্যগ্রহ ।
আমি ধরা দিতে চাই দীর্ঘ নিঃশ্বাসে
শস্য-শ্যামলা সবুজ রঙে ।
কষ্ট বেদনা গ্রাস করে তাই –
ওদের জন্য ধরা দিয় না ।
তুমি কি পারবে না ?
ভালোবাসার জন্য বয়কট রাখতে।
কমে যাক অভাগা, হতদরিদ্র, ভুখা,সমস্ত ময়লা ।
ভালোবেসো আমায় জ্বলন্ত সত্যতায়–
ওগো মন ময়ূরী
ফিরে আসুক আবার সত্যযুগের রসনা।
রচনা– বিপ্লব দাস
বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর ,পশ্চিমবঙ্গ
তাং–২৪/০৮/২০১৯(১১টা২৮ মি:রাত)