"বসন্তের জন্মদিন"
          বিপ্লব দাস


দিকভ্রান্ত এক ময়না এসে বলেছিল–আমার প্রিয় বসন্তের জন্মদিনে তাকে নিয়ে অন্তত একটা কবিতা লেখো ।
না হলে সযত্নে শহরের সমস্ত  দেওয়াল লিখনে ভরিয়ে দাও।
সূর্য পোড়া মনটার উদগ্রীব, কোনো কবি পারেনি আড়াল করে রাখতে।
বসন্তের বাতাসে ব্যক্তিগত কত পলাশ, প্রজাপতি রেনুগন্ধ ছড়িয়ে
বয়স ভারের আবির মেখে,  রোদে রোদ মেখে,
আজ হারা পাথরের তলায় ডুবে যায়, জীবনের এক নব সংসারে।
তাদের জীবন খন্ড খন্ড সিঁড়ি।
বসন্ত ঋতু আসলেই, জন্মদিনের ঘনঘটা হলেই,
অসুখ ও বিষাদের কাছে নতুন করে ঋণী হয়ে যাই,
জানিনা সুখ কবে উপচে পড়বে ঘুণধরা শহরে।


আমার আঁচলে  অনাদিকাল মেঘলা, ঘুম ভাসিয়ে দিয়েছি কোনো কবির স্রোতে।
আমার দুঃখ পুষে পুষে  সে যদি জ্বলে ওঠে একটিবার।


আমারও 'আজ' শব্দটি বিবর্ণ হয়ে পড়ে থাকে।
বসন্তের জন্মদিন নিয়ে আসে না কোনো কবিতা।
বসন্তের জন্মদিনে ভুল করেও হয়নি আমার অসুখ।
আবির টিপ চিরকালই আমার অপ্রিয়।


তাই রাগে অভিমানে সে ময়না এঁটে দিয়েছে আকাশের দরজা।
তার চোখ থেকে বসন্তকে ভেজা অমূল্য অশ্রু
বসন্তের নামে অতুলনীয় বসন্ত পাঠ।
মাঝে মাঝে আমায় দেখলে বাজে শিস দিতে দিতে উড়ে যায়।
আমার নামে বয়কট ডাকে, আমার কবিতা তার নাকি আজ অপছন্দ।
তার এই বিষাদ গুনগুনের সুর আমি পাত্তা দিইনা।


বসন্ত কি জানে মধ্যবিত্তের অদৃশ্য মধ্যাহ্ন?
আবির দিয়ে কত আবেগের মৃত্যু
আমি বা তুমি বা বিষাদী  ময়নার পকেট থেকে এক বিন্দু আবির দিয়ে যায়না রাগানো বসন্তকে।
সে তো রাঙে প্রকৃতিসহ রোদ রঙে
মোহময় ফুল-ফলের সুগন্ধে
আর সেদিনই ঘোষিত করে প্রকৃতি মা "শুভ জন্মদিন বসন্ত বাবু"
ভালো থেকো আমার অন্তরের অন্তরালে,
যে ব্যথা, বেদনা শুধুই কল্পনা  পৃথিবীর  মানবীর কাছে।।


রচনা–বিপ্লব দাস
তাং–১৪/০৩/২০২২