কি মনে পড়ে প্রিয়!
   বিপ্লব দাস


কি মনে পড়ে প্রিয়!
আমাদের দু-একটা সত্য স্বপ্ন সত্যিই সেফটিপিনে ছিল আটকানো।
এত কাছাকাছি আত্মসমর্পণ জরানো চৌম্বকীয় ছায়া,
সত্য সাগরে ডুবেও তুমি ভাবোনি।
পৃথিবীর বুকে এমন মায়া হাসি রহস্য হয়ে থাকবে।
আমার এই ব্যতিক্রম জন্ম ভেবে নাও,
শুধু তোমারই জন্য।
চোখের সামনে বর্ণময় দৃষ্টি, শুধু তুমিই প্রিয়।


বিচিত্র মানুষের ভিড়ে তুমি আজ আমার অনন্ত সুখ।
মুঠোভরা  উষ্ণ অনল,
ইচ্ছেমতো অভিমানী মনটাকে জ্বালিয়ে দিয়ে,
হাজারটা লালরঙ্গা গোলাপ ফুটে ওঠে,
দিক হারানো নাবিকের প্রতি।
জানো, জীবনভর নাবিকের প্রতি আমি ভীষণ দুর্বল।
দীর্ঘ নিঃশ্বাসে মাঝে মাঝে মনে বাজে কোলাহল।
আমিও ভাবিনি এ জন্মের আঘাত প্রতিঘাত,
পাখি হয়ে খুঁটে খাবে সমস্ত বিষাদ।
স্বাভাবিক সমুদ্রের ন্যায় জন্মটাও স্বাভাবিক হলো।


সংসার জমিনে সার দিতে দিতে,
মনখানি থ্যাঁতা হয়ে গেছে।
জনালার বাইরে নক্ষত্রেরা দিতে চেয়েছিল সময়,
অসংখ্য সূর্য ডোবা তালা দিয়ে মনটাকে
রাখি আটকে।
সেই সূর্য ফুল আর উদয় হয় না।
তবুও অকস্মাৎ  সূর্য সরে দাঁড়াবে, পৃথিবীর সরে দাঁড়াবে, তুমি এসে দাঁড়াবে?


এ আমিও ভাবিনি,অপূর্ব এক সময় মুখাবয়বের ওপর প্রাণোচ্ছল ভাঁজ ।
কেটে গেল শতাব্দীর অসহ্য অন্ধকার।


কি মনে পড়ে প্রিয়!
আমার এ  দ্বিতীয় জন্ম,
আত্মহত্যার দিনগুলি থেকে এনেছিলাম তোমায় সশরীরে।
কি মনে পড়ে প্রিয়!
শহর ছেড়ে যখন অসুখ বাতাস দিয়ে চলে যাচ্ছিলে
সমবেদনায় প্রকৃতির ফুলগুলি ঝরে পড়ছিল,
তবুও সেদিনই ছিল তোমার আমার সিঁদুরমাখা বসন্ত।


শত মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গেলেও,
ওই দুটি সত্যস্বপ্ন, বসন্ত
আজীবন থাকবে আটকানো সেফটিপিনে।
অকৃতজ্ঞ মানুষের
আঙ্গুলের তীর্যক অপবাদে জেগে উঠবে,
পুরনো ভালোবাসার স্বাদে আবার ফিরে আসবে।


কি মনে পড়ে প্রিয়!
আমাদের সেদিনের বসন্ত উৎসবের কথা,
মুছে দিয়েছিলাম দুজন– দুজনার  আঁখি অশ্রুর অব্যক্ত ব্যাথা।


রচনা–বিপ্লব দাস
তাং–২/০৩/২০২২