তোমাকে দেখলে আজ অচেনা মনে হয়- দূরের মনে হয়। তুমি আজ যেন ঝাপসা সবুজের বন। যেন সন্ধ্যার আঁধারে নিভু নিভু সূর্য গ্রাস। যেন বালুকার ভঙ্গুর বাঁধ, চূড়ান্ত ক্ষয়ের জন্য কিছুকাল অপেক্ষা প্রহর।


অথচ তোমার কাজল চোখ চেয়ে একদিন আকাশের অজস্র তারা গুনে গুনে দেখতাম দিনের দারুণ রবি। তোমার মেঠো শরীরের নূনতা গন্ধ শুঁকে শুঁকে কতদিন পথ হারিয়েছি কত না পথে পথে।


আজ তোমাকে আপন মনে হয় না- যেমন আপন থাকে নদী ও জল। দুজন দুই জীবনে, তবু কে কাকে ছাড়া বাঁচে বলো? আজ শুধু মনে হয়, তুমি- কুমারের তীরে দাঁড়িয়ে থাকা আজন্ম হিজল বৃক্ষ। আহা! কতকাল একা একা এ পথে দাঁড়িয়ে আছে বেচারি। কেউ নেয়নি এতোটুকু খোঁজ। হায়! জীবন।


আমি কী পারতাম? না, আমি কী পারতাম না? -জানি নাতো। তুমি জানো কী? নাকি জানো না আমার মত। ভালো। এখন জেনে কী লাভ!


তুমি বলবে কী, আজও কী তোমার হৃদয়ে আমি আছি- অতীতের অন্ধকার স্মৃতি হয়ে, অথবা অযত্নে পরে থাকা ঘরের পুরাতন ছোট্ট ফার্নিচারের মত অন্তত? নাকি, উন্মত্ত পদ্মার তীব্র স্রোতে হারি যাওয়া এক মুষ্ঠি বালুরাশি যেমন?


যাইহোক, তবু জেনো তোমাকে আজও ভালোবাসি। বাতি নিভে গেছে, তবু স্মৃতি আজও আছে অমলিন।


১৪ জানুয়ারি, ইস্কাটন, ঢাকা, দুপুর।