সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত কাব্য।


----সম্পদের লালসায়----


কলমে______বিশ্বজিৎ


সময়টা তখন দুপুর বারোটা আচমকা আমার মোবাইল
ফোন টা রিং রিং শব্দে বেজেই যাচ্ছে।
আমি অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলাম,
পরে কথা বলব ভেবে
ফোনটা ডিসকানেক্ট করলাম।
অপর প্রান্তে নিশ্চয় বোধগম্য হয়েছে
কেটে দেওয়ার কারণটা।
কিন্তু না!
আবার ফোনটা বেজে উঠল!
দৌড়ে এগিয়ে এসে ফোনটা রিসিভ করলাম।
অপর প্রান্তে ওয়াইফের গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম।
এই জানো একটা খুব বাজে খবর শুনলাম।
আমি বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেলাম।
তোমার একজন প্রাক্তন ছাত্রী গতকাল খুন হয়েছে।
বলো কি ? কে কার কথা বলছো!
আলিকাকুর ছোটো মেয়েটা যাকে তুমি ছোট্ট বেলায় পড়াতে।
ছোটো একটা বারো বছরের ছেলে আছে ,
ইস ছেলেটা অকালে মাকে হারালো!
কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না
মেয়েটা বয়সতো খুব কম!
হ্যা,
আচ্ছা ওকে কারা এবং কেনই বা মেরে ফেললো?
ওর কি অপরাধ ছিলো?
আমি যতদুর জানি মেয়েটার আচার ব্যবহার খুব ভালো,
শান্ত প্রকৃতির।
এই জানো কথাটা শুনে আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে মেয়েটার জন্য।
কি বা বয়স !
কিভাবে মেরেছে মেয়েটাকে ?
কি কারণেই বা মেরেছে,
জানো কিছু?
হ্যা , শুনছিলাম কিছুদিন আগে ওর
শাশুড়ি মারা যায় বার্ধক্যজনিত কারণে
শাশুড়ির কিছু সোনাদানা টাকা পয়সা রেখে যায় আলমারিতে। শাশুড়ির ওই আলমারিটা থাকতো ছেলেবৌমার ঘরেই।
কয়েকদিন আগে থেকেই বড়ো ভাসুর আর বড়ো ননদ শলাপরামর্শ করেছিলো ওই টাকা পয়সা ও গয়নাগাটি নিয়ে ।
ঐগুলো তারা আত্মসাৎ করার উদ্যেশ্যে
গত পরশু চড়াও হয় ভাইয়ের বাড়িতে।
তারপর বাগবিতণ্ডা।
শুনলাম মূখে বালিশ চেপে ধরে দম বন্ধ করে দিয়েছে, তারপর দড়ি দিয়ে ফ্যান সিলিংয়ে ঝুলিয়ে দেয়।
কি সহজ প্রন্থা, কি জঘন্য মনুস্বত্ব,
এতটুকু ভয় লজ্জা লাগে না এই মুখোশধারী মানুষদের।   দেখতে মানুষের মতো কিন্তু
অতি নিকৃষ্ট প্রাণীর মতো হিংস্রতা।
চারিদিকে করোনা ও অমিক্রণ এর কঠিন পরিস্থিতি,
কত স্বজন হারানোর যন্ত্রনায়
কত মানুষের জীবনে দুঃখ নেমে এসেছে,
কত মৃতের আত্মীয় স্বজনদের হাহাকারের কান্নায়
বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
আজ এমন একটা সময় এর মধ্যে দিয়ে
আমরা একটি একটি করে  দিন অতিক্রম করছি।
চারিদিকে গভীর শোকস্তব্ধ
থমথমে পরিবেশ।
অন্ধকার রাত্রি পেরিয়ে অজানা উত্তেজনায় অজানা সকাল দেখতে হচ্ছে,
প্রতিদিন প্রতিটি মানুষের।
কেউ মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়ে ছটফট করছে
আর কেউ লালসা আর স্বার্থের বশবর্তী হয়ে
সম্পদের নেশায় সবকিছু
আত্মসাৎ ও কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে
একে অপরকে নিষ্ঠুর হত্যালীলায় মেতে উঠেছে।
হায়রে ভাগ্যবিধাতা!
একোন আধুনিক সভ্যতার জগতে আমরা বিচরণ করছি। এখনও এই সমাজে এমন কত পৈশাচিক নরক যন্ত্রণা ও নরকের দৃশ্য আমরা বার বার প্রত্যক্ষ করবো।
আর কতো নারী এভাবে দিনের পর দিন
চরম নর-রুপী রাক্ষসদের শিকার হবে বলতে পারো?
  
    ######################