আমরা ছুটে চলছিলাম সমস্ত বাঁধা পেরিয়ে
সমস্ত ঝোপ-ঝাড়, ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি;
(যা আমাদের ভিজিয়ে দিয়েছিলো সম্পূর্ণভাবে)
সমস্ত কিছুকে উপেক্ষা করে, উম্মাদদের মতো
ছুটে চলেছিলাম অনবরত সামনের দিকে,
পিছন ফিরে তাকাবো না-
এই কি আমাদের শপথ ছিলো ?
আমরা কি তবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম পরস্পর ?
তা না হলে আকাশ কাঁপিয়ে যখন
বিজলী চমকালো- আর তুমি সভয়ে
আরো কাছে ঘেঁষে চেপে ধরলে আমার হাত,
কই-তখনো তো বলোনি-
" আর নয় কবি, এবার ফিরে যাওয়া যাক !"
আমাদের সঙ্গীটি তখনো ছুটে চলছিলো
তার কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে, আমরাও
দ্রুত তাল মেলাচ্ছিলাম তার সাথে-
কাঁদামাখা গ্রাম্য পথ ধরে ধরে ।
আমরা কি লক্ষ্য করেছিলাম, আমাদের
সঙ্গীটির চোখ জলে ভেজা ছিলো কিনা ?
সে কি তখন নীরবে কাঁদছিলো ?
সে খুঁজছিলো তার প্রেম, তার হারানো প্রেম !
আমরা তাকে সাহস দিচ্ছিলাম;
(কিন্তু কে জানতো ? আমাদেরও প্রেমও
হারিয়ে যাবে একদিন ! আর সে-
সাক্ষী থাকবে সে ভয়াবহ দুর্দিনের !)
আমরা ছিলাম তিনজন; আমি, তুমি আর সে
(কিন্তু আমরা ছিলাম অভিন্ন হৃদয়)
আমরা খুঁজছিলাম অনবরত সেই ঠিকানা,
যে ঠিকানায়- আমাদের সঙ্গীটি তার
প্রেমকে পাবে, আমাদের চোখে ছিলো
ভয়, উৎকণ্ঠা আর এক চিলতে আশা;
(কিন্তু আমরা ব্যর্থ ছিলাম সেদিন;
কাঙ্খিত ঠিকানায় ঠিকানাহীন মানুষটার
বদলে পেয়েছিলাম নিদারুণ হতাশা)
মন খারাপের পৃথিবী নিয়ে ফিরে
আসতে হয়েছিলো আমাদের সুদূর পিছনে,
কাক ভেজা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমরা
ছুটে চলছিলাম, আবারো ঝোপ-ঝাড়, বাঁধা ডিঙ্গিয়ে
ফেলে আসা পিছনের কর্দমাক্ত পিচ্ছিল পথে ।