বানের জলে ,ভরে গেল
আমার ছোট্ট কুঁড়েঘর ,
টানা বর্ষণে খসিয়া গিয়াছে
জীর্ণ চালার  খড়।


খাবারের হাঁড়িটা কোথায়
যেন , গেছে ভেসে,
গোয়ালে বাঁধা গরুটার
ঘুঙ্গানোর শব্দ আসে।


বউ আর দুধের শিশুটাকে
মাচার উপর বসিয়ে ,
একটা খুঁটির সাথে,
বান্ধিয়া রাখলাম কষিয়া।


ভোর হতেই দেখি
চোখের সামনে সমুদ্দুর ,
চারিপাশে , জলধারা
দৃষ্টি যায়, যত দূর।


গাঁয়ের মানুষেরা
খোঁজিতেছে স্থল ,
মাথায় নিয়ে ছুটিতেছে
তাদের শেষ সম্বল।


বুক ফাটিয়ে কে যেন ,
করিতেছে বিলাপ ,
আমারে রাইখ্যা কোথায়
গেলি রে, কলিজার বাপ।


গতরাতে বুঝি  মারা গিয়াছে
সুক্কুরের  মার পোলা ,
আকাশে ,বাতাসে তারই আর্তনাত
বারে ,বারে দিচ্ছে দোলা।


বেলা বাড়িতেছে , তবুও
যেন , সন্ধ্যা এল নেমে ,
কলকলিয়ে পড়ছে বৃষ্টি
খানিক থেমে , থেমে।


মাঠ ভাসিল , ঘাট ভাসিল
ভাসিল সারা গাঁ ,
চোখের জলে বুক ভাসিল ,
পরান করে খাঁ , খাঁ।


আকাশ পানে তাকিয়ে থেকে ,
প্রশ্ন জাগে মনে ,
কোন দোষে আজ এমন
দশা , আমাদের জীবনে।


তলিয়ে যাচ্ছে , ভেসে যাচ্ছে
খেটে খাওয়া মানুষের দল ,
বাবু সাবরা দালানে শুয়ে,
কষিতেছে এর ফল।


যাদের ঘামে , গড়া এই দেশ
তারাই যদি যাই ভেসে ,
কি লাভ ঐ নিশান উড়িয়ে ,
এত উন্নতি যশে।


অনাহারে , অবহেলায়
নয়ন জলে মোরা ভাসি ,
তোমরা গড় টাকার পাহাড় ,
আমার আজ বান বাসি।