জল কি শুনবে তোমার কথা—হাওয়া, আগুন শুনবে ?
তবে খুলে বলো তোমার সব কথা একে একে
জলকে বলো তোমার সুখের কথা, ভেসে থাকবার কথা
আর বলো তোমার বর্ণচোরা স্বভাবের কথা—
কীভাবে এক পাত্র থেকে আরেক পাত্রে পাল্টে ফেল রূপ সহজে
মেঘ বৃষ্টি, তারপর এক নদী থেকে আরেক নদী
ছুটে বেড়াতে বেড়াতে খাল, ডোবা, মজা পুকুর  
আর কাদায় মুখ ডুবিয়ে থাকা চতুর মাছেদের কথা
বলতে ভুলনা, কচুরিপানার সাথে তোমার নিবিড় সখ্যতা !


হাওয়াকে বলো তোমার শোকের কথা জন্মাবধি
যা বয়ে বেড়াচ্ছ একা একা ; তোমার দুঃখ ও চিরবিচ্ছেদের কথা—
কাকে কোথায় ফেলে এসেছ ভালোবাসার নামে—সেই পুষ্পের কথা
যার গন্ধে ব্যাকুল হতো তোমার প্রতিটি রাত্রিবেলা
আর বলো— কে তোমাকে ফেলে গেল এখানে
বনে পাহাড়ে অনন্ত বিহারে –যে ফিরতে চেয়েও আর ফিরল না
যার কথা ভাবতে ভাবতে তুমি মাঝে মধ্যেই পাথর হয়ে যাও
মুখ ফুটে বলো হাওয়াকে বয়ে নিয়ে যাক তোমার বার্তা


আগুনকে বলো তোমার তুমুল অস্থিরতা ও ক্রোধের কথা  
শান্তি শান্তি করে কিভাবে পুড়িয়েছ নগর বাজার  
অস্থি কঙ্কাল বৃক্ষ তরুলতা
আর সেইসব ছাইভস্ম থেকে কীভাবে ধোঁয়া উঠছে এখনো
তুমি জানো, কিছু বিশ্বাসী জীবাশ্ম থেকে গেছে মাটির নিচে  
সেগুলো ব্যবহার করে করে তুমি আর কাকে কাকে
নিঃশেষ করায় রত—কিসের নিমিত্ত মাত্র তুমি জ্বলে ওঠো !    
সব রোগ তো নিরাময় যোগ্য নয়— তোমার কোন অর্গানে
কোন রোগ পুষে রেখেছ , খুলে বলো— ভয় নেই
ও তো সর্বভুক—সব কিছু হজম করে ফেলবে নিমেষেই!!