গোলাপের বুকে ধুতরা
============@@@


দিন নিভে যায় রাতের বুকে
রাত হারে ফের দিনে,
মাস দেখে তা অব্দ গড়ে
চক্রটারে কিনে।


পরাণ দাদুর ঢের বয়স হয়েছে
তবু রাত হলেই নিরালে লিখে প্রেমপত্র।
সেদিন কাছে বসে জিজ্ঞেস করলুম- ’ও দাদু কারে দাও গো?’
এক চিলতে সোনালী হাসি বদনখানিতে টেনে
আহ্লাদে সুরে বললো- ”তা কি আর শুনতে আছে রে দাদু!
যৌবন কালে লক্ষ্মী রাণীর প্রেমে পড়ে
প্রতি রাত্রে দিতেম পত্র লিখে- ‘লক্ষ্মী রে তুই আমার
হৃদয় বাগিচার সদ্য ফোঁটা গোলাপ!’
তারপর ---
আমি গরীব বলে ফেলে চলে গেলো একদিন অন্যের ঘরে
কিন্তু আমি ভুলতে পারলুম না। আজও প্রেম পত্র লিখি
শুধু গোলাপের বদলে ধুতরা বসিয়ে।
আর গোলাপ লিখতেও পারি না
লক্ষ্মীরে দেখলে তাই দেওয়াও হয় না!”


তার কষ্টের কথাগুলো শুনতে খুব খারাপ লেগেছিল।
খারাপ লেগেছিল হঠাৎ তার নির্মল আকাশে
জমে উঠা এক খণ্ড ধড়ফড়ে মেঘে দেখে।
একদিন পরাণ দাদু থাকবে না, আমি ক’দিন বেঁচে
থাকলেও হয়তো ভুলে যাবো সেই কষ্টের কথাগুলি
কিন্তু আমৃত্যু জেগে থাকবে তবু তার অকৃত্রিম মমতায়
মোড়ানো ‘গোলাপের বুকের ধুতরা’ অমলিন হয়ে
আমার এই ধুসর বন্দরে।


==============@@@
পাঁচুপুর, আত্রাই, নওগাঁ।
২১/১০/২০২১ইং।



@বোরহানুল ইসলাম লিটন