ঈশান কোণে, মেঘ জমিনে মৃত্যু করি চাষ, নীল
পিয়ালে বসুধার নিয়তি, তাঁরা হয়ে থরে থরে
ফুটে রয়। এখানে নিত্য বুলেটের ঝনঝন সুরে
ওঠে ঝংকার, চকিত চাহনির সদ্য ফোটা গোলাপের
পাপড়ি নিমিষেই ঝরে যায়, পথে পথে সবুজ
মাঠে, ঘিঞ্জি পাকা দস্যুর ওঠে হুংকার। আঁধার
রাতে ধুলোর ভাঁজে ভাঁজে, সঞ্জীবনী জীবনের অলীক
ধাঁধাঁ, নষ্ট দুখের সমহারে বিষণ্ণ শিশুর, ক্লান্ত
প্রহরে ভাঁটির শহরে, মৃত স্বপ্নের ভাগাড়ে হামাগুড়ি
দিয়ে খোঁজা, তৃষ্ণার্ত ঠোঁটে, বিমুগ্ধ ফাল্গুনি হাওয়া।


ধোয়াটে আলো ছায়, সীমাহীন গুমোট গুহায়, অগ্নিলোকে
প্রেম পুড়ে হৃদয়ে হয় গ্লানির চাষ। মর্ত্যের রূপসী
স্নান করে বিরহ জলে, কমল পদ্ম মেঘে মেঘে ঢেউ খেলে
অন্ধ কুটিরে ঘন কালো পাপের সাগরে, রিনিঝিনি
নুপুরে, আলতা বরণ পাখানি আজো বাঁধা। কণ্ঠের বিষে
উগ্রে দেয় দাবানল, অশান্ত অঞ্চলে নিঃসঙ্গতার দুর্নিবার
আঘাত, রেখে যায় পদচিহ্ন। অদ্ভুত গ্রহে মায়ের
শূন্য, দগ্ধ বুকে মানবতার ক্ষত চিহ্ন, মাটির কোলে
ঘুমন্ত শিশুর লাশ, চরের বুকে জেগে ওঠা, নব পথিকের
রক্ত ধারায় টলমলে এক ফালি সবুজ ঘাস। মুমুরশ
পৃথিবীর রুগ্ন অভিযানে আজ সন্ধির আওভান। ঝরা
পাতার বুকে রক্ত দিয়ে লেখা, সমর পত্রের চোখ রাঙ্গানি।


অগ্নি গোলকের বিমূর্ত রূপে, ঝলসে যায় থরে থরে
ফোটা তাঁরার আলো, সভ্যতার নামে অসভ্যতায় দ্বিধার
প্রলেপ। ক্ষমতার লালসায় শোকাবহ প্রেম উপখ্যান, মুক্তি
কামিনী মৃত্যু দিয়ে করে গেছে প্রত্যাখান। এখানে শকুনের
ঠোঁটে রক্ত বিলাস, উদ্বাস্তু শিবিরে আজ কেবল ত্রস্ত মনে
বাস। এখানে মূর্খের সন্মানে, বধির মূর্তির দল ঢেলে
দেয় অমৃত সুধা, এখানে নক্ষত্রের পানে চেয়ে, মিলনের
গান গেয়ে, মিথ্যুক পথিকের পেটে ক্ষুধা। ধ্রুমজাল ভরা
জাদুকর , আজ কালো মেঘে পেতেছে বাসা, অস্ত রবির
স্নিগ্ধ কোমল আলো, নিরপলকে চোখের পলকে মেশা।
এখানে ফেনায় ফেনায় ভেসে ওঠে, কাল নাগিনীর ছোবল
বিধ্বস্ত নগরে শুধু, বসন্তের পোড়া দাগ, এখানে কুটকুট
করে কাটা জীবনের পাতায় নেকড়ে ইদুর আনন্দে মুখর।