ঝড় তোলা একটি রাত, নিয়ে এল কালো ছায়া
দিগন্তের খোলা মাঠে, নিভৃতে নির্জনে কাঁদে মায়া
ঘুমন্ত পায়রা উরন্ত ডানায়, হঠাৎ হচকচিয়ে ওঠে
বিভীষিকাময় আগুনের কুণ্ডলী, দূরদূর তৃষ্ণা ঠোঁটে।


গ্রেনেড মর্টার গুলি, চারিদিক উড়ছে কেবল ধূলি
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভাসছে কেবল, মরা লাশের খুলি
মুক্ত হাওয়ায় বিষ মাখানো, থেমে যায়রে দম
করুণ পাঠের কাব্য হয়ে, ধরায় এলো যম।


দীপান্বিতার রক্ত স্রোত, আমার হারিয়ে গেছে প্রেম
আতঙ্ক মনে শিহরণে খুজি, স্মৃতি বাঁধানো ফ্রেম  
ক্ষতবিক্ষত দেয়ালে, ছোপ ছোপ রক্ত ঝরা বৃষ্টি
জ্বল জ্বল চোখে, পাকি হায়নার লোলুপ দৃষ্টি।


মাগো আমার ভাল্লাগে না, জাগি গলায় রশি বেঁধে
পরাধীনতার অচল নীদে, হাসফাঁসিয়ে ডুকরে উঠি কেঁদে
সোনালী ফসল হয় চুরি, ভুখানাংগা পেটে খিদে
মাগো আমার ভাল্লাগে না, জাগি গলায় রশি বেঁধে।


স্বপ্ন মাঝে চিল ওড়ে মা, ধরতে আসে আমায়
হাতের কাছে নাই যে দা, কেমন করে থামাই?
ঘূর্ণি স্রোতে রক্তের খেলা, মরে বাঁধন কেটে স্বজন
কুমারী বোনের দেহ দিয়ে, হায়না করে ভোজন।


দামাল ছেলের কলিজায় মাখা, যুদ্ধ পিয়াসী ঝাল
মাগো মুক্তির স্বাদ নেব আজ, ছাড়িয়ে নেব ছাল  
মার খাওয়া চাবুক পিঠে, হাড্ডি আসে ভাগে
তরুণ বুকে সূর্য লাল, কোন দিন জানি জাগে?


মুক্তির নিশান উড়ায় কৃষাণ, কণ্ঠ হলে রোধ
মৃত্যু পাড়ে সাহস ভরে, করে নেয় শোধ
লক্ষ শব্দের মধ্যমণি, রক্তিম বর্ণীল স্বাধীনতা
ছাত্র সেনা বুদ্ধিজীবী, দিল সবে মুক্তির বারতা।


প্রজা মনে উঠলো জেগে, রাজা হওয়ার সাধ
বুকের তাজা রক্ত দিয়ে, বানায় সকল বাঁধ
কাল নাগিনীর ছোবল হয়ে, পোড়াই যখন শ্বাস
নওজুয়ানি বীর সাঁজেগো, ওরাই হল দাস  


আজো রয়েছে সাহসী যোদ্ধা, প্রতি বাংলার ঘরে ঘরে
সংশয়ে ওঠে দাবানল জেগে, চারিদিক মহত্ত্ব তারি ওড়ে
শত নদের দুকূল ছেপে, আজো বইছে বীরত্বের ইতিহাস
সবুজ কানন রোদের খেলায়, হাসে বিজয়ী মুক্তির উল্লাস।


লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে, একটি স্বাধীন বাংলাদেশ  
রক্ত ঢেলে ফোটায় ফুল, বন বনানীর কেশ
ললনা আজ ঘর পেয়েছে, স্বর পেয়েছে পাখি
মুক্ত মনে আজ আমি, বাংলাকে মা ডাকি।