রক্ত খাবে? একজন সৎ মানুষের রক্ত?
সাদা চামড়া চাই, নাকি কালো চামড়া?
উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণ, হলদে ফর্সা; চলবে?
সাদা হোক বা কালো কুচকুচে, কথা দিলাম-
এক গ্লাস তাজা টকটকে লাল রঙা রক্ত পাওয়া যাবে।
শতভাগ সৎ মানুষের রক্ত তো!
রক্ত খাবে? একজন সৎ মানুষের রক্ত?
যতো খুশি ততো একবারে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে!
এখন থেকে আর কষ্ট করে, রোজ রোজ চুষে খেতে হবেনা সাহেব।
তাতে বড় কষ্ট হয়। টাকার কষ্ট, খাওয়ার কষ্ট, ঘুমের কষ্ট!
বাজারের সব থেকে বড় সিরিঞ্জটা হৃদপিন্ডে ফুঁড়িয়ে,
বিশুদ্ধ রক্ত টেনে বের করে ভরিয়ে দেবো গেলাস।
সাহেব, এখন এক গেলাস দেবো? একদম টাটকা আর উষ্ণ।


বছরের পর বছর, পে-অর্ডার, ব্যাংক ড্রাফটের পয়সা যোগাতে গিয়ে,
এ দরজা, ও দরজা ঘুরে ঘুরে, হাড়-মাংস, জুতোর তলা- দু'ই ক্ষয় হয়ে যায়।
অথচ হামেশাই কড়কড়ে নোটের বান্ডিল ছুঁড়ে চাকরী নামক-
সোনার হরিনের মালিক হয় কোন এক বেনামী কালাচাঁনের ছেলে।
সাহেব, তোমাদের এই রক্ত খাওয়ার গল্প সব টেবিলেই একইরকম।
আচ্ছা সাহেব, তুমি যখন পরম আয়েশে নোট গুনতে গুনতে-
থুথু দিয়ে আঙ্গুলের ডগা ভিজিয়ে নাও,
তখন, নোটের গায়ে ছাপানো পবিত্র উপাসনালয় অথবা জাতির জনকের মুখচ্ছবি,য়
ক্ষনিকের জন্যেও তোমার আঙ্গুল গুলি আর লম্বা লকলকে লম্বা জীভটাকে অসাড় করে দেয়না?
আমি কোনদিন রক্ত খাইনি সাহেব, কিন্তু তোমাকে দেখে ঠিক বুঝতে পারি।
কতোটা গাঢ় এই নেশা, যে নেশা নষ্ট করে ঈমান, ধ্বংস করে চিরায়ত মনুষ্যত্ব।


পলাশী থেকে বায়ান্ন, তারপর একাত্তর হয়ে আজ দু'হাজার ষোল;
হে মীরজাফর, তোমার জন্যই বাঁচিয়ে রেখেছি এই পূণ্য রক্ত।
এসব এখন তোমাকে বলে কি লাভ বড় মানুষ?
তোমার বুভুক্ষু উদর শুধু রক্ত চায়, ভাষা নয়।
দেবো সাহেব? এক গেলাস তাজা টকটকে লাল রঙা রক্ত?
ভয় নেই, শতভাগ সৎ মানুষের রক্ত জল করা রক্ত!


© সুব্রত ব্রহ্ম
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬ইংঃ
ময়মনসিংহ।