বড় লোভ হয়- জানোতো? দরজার চৌকাঠের পিছনে-
লুকিয়ে থাকা তৃষ্ণার্ত কুনো ব্যাঙের মতো,
বাড়ির ঘুলঘুলিতে বাঁচা ত্রস্ত চড়ুইয়ের মতো,
ঘাসের তলায় কাঁদার ভিতর অন্ধ কেঁচোর মতো, অথবা-
তোমাদের চারপুরুষের বুড়ো বাড়ির ছাদের কার্নিশে
ভিজে জুবুথুবু বিহ্বল দাঁড় কাকের মতো,
খটখটে শুকনো নদীর বুকে নি:সঙ্গ নৌকার মতো;
এই ভরা বর্ষার রাতেও আমি আশ্বিনের শিশির খুঁজে ফিরি!


আমার নদীতে বানোৎসব; বানের তোড়ে ভাসে-
বহু বছরের চর্চিত পাঁচালির অংশ বিশেষ।
নামাজির টুপি, বেনারসি শাড়ি, ভাঙ্গাচাল আর মরা গরু।
পঁচা তোশক, নকশিকাঁথা, উপড়ানো সজনে গাছ,
গাছের গায়ে আটকে যাওয়া তালপাতার পাখায়
সিঁদুরে মেঘের ছায়া খেলে যায়। ছায়ার কোলে,
ভরা নদীর বুক চিরে এগিয়ে চলে, একটি ধূপ-ধুনো সজ্জিত-
কলার ভেলা; তারই মধ্যে ঘুমিয়ে আছে একটি ছোট্ট নিথর দেহ!
গোধূলির বিষণ্ণ আলোয় একেএকে ভেসে চলে,
আমাদের পার্থিব যতো লোকসান।


পুব আকাশের সন্ধ্যা তারা,
তোমাদের চারপুরুষের বুড়ো বাড়ির মস্ত আকাশে-
একটি একটি করে জ্বালে হাজার আলোর প্রদীপ।
জমকালো আলোর রোশনাইয়ে লুকোচুরি খেলে-
অজস্র বানভাসির অর্ধ নিমজ্জিত আকাশে,
কোনক্রমে ঝুলে থাকা এক ফালি চাঁদ।
এতোটুকু আলোতেও এপাড়ে বসে,
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, ওদের গাল বেয়ে গড়ানো-
চিকচিক করতে থাকা মায়াবী রুপালী জল।


বড় লোভ হয়- জানোতো? দরজার চৌকাঠের পিছনে-
লুকিয়ে থাকা তৃষ্ণার্ত কুনো ব্যাঙের মতো,
বাড়ির ঘুলঘুলিতে বাঁচা ত্রস্ত চড়ুইয়ের মতো,
ঘাসের তলায় কাঁদার ভিতর অন্ধ কেঁচোর মতো, অথবা-
তোমাদের চারপুরুষের বুড়ো বাড়ির ছাদের কার্নিশে
ভিজে জুবুথুবু বিহ্বল দাঁড় কাকের মতো,
খটখটে শুকনো নদীর বুকে নি:সঙ্গ নৌকার মতো;
এই ভরা বর্ষার রাতেও আমি আশ্বিনের শিশির খুঁজে ফিরি!


|| দহন- ৫, বানোৎসব ||
©সুব্রত ব্রহ্ম
অগাস্ট ২১, ২০১৭ইং
ময়মনসিংহ।