পূব পাড়ার কালু শেখ ফযরের ওয়াক্তে হাজির অইতেই,
আমার দরজাত খডর-খডর, খডর-খডর শুরু অইয়া গেল।
এই আচম্বিত শীতের রাইতে চোরা হিয়ালের দলও-
গাতার মইদ্যে ঘাপটি মাইরা হুইয়া রইসে।
কালু শেখের তাইতে কিসুই আহে যায়না।
এইডা তার ঊন্নিশ বৎসরের অব্বাইস,
আমি যেইদিন নিশি রাইতে আৎকা গুম(ঘুম) বাইঙ্গ্যা দেকলাম,
বাড়ির উডানের লেসু গাসের (লিচু গাছের) ডালত্তে বইয়া-
আমার হিয়াল-কুত্তায় খাওয়া শইলডারে, আমি নিজেই দেকতাসি;
এইডা হেই দিনের কিচ্ছা, মেলা লাম্বা হেই কিচ্ছা।
মাইনষের শইল ছাইড়া, একটা পেসা (পেঁচা) অইয়া যাওনের কিচ্ছা।
আমি জানি, কালু শেখ অহন হারিকেলের সলতা কমাইয়া,
আমার গরের(ঘরের) দাওয়াত হুইয়া পরবো।
আর একটু বাদে বাদে, আমার দরজাত খডর খডর আওয়াজ করবো।
এর মানে অইলো, "মা.. মা গো.., কালু শেখ আইয়া পড়সে, কুনু ভয় নাই,
তুমি নিচ্চিন্তে গুমাও(ঘুমাও) মা। তুমি নিচ্চিন্তে গুমাও।


কালুর নাক ডাহনের বদ অব্বাইস(অভ্যাস)। হের বউয়ে কইতো-
এইডা নাকি ব্যারাম। বিরাট খারাপ ব্যারাম। চৌকিদারের জমিদারি ব্যারাম। হা হা হা।
কালু মাইয়া মাইনষ্যের কতায় কান দিতোনা।
আইজ কালু শেখ 'কালু পাগলা'। হায়রে পোড়া জীবন!
আইজ ঊন্নিশ বসর(বছর) অয়, কালু গেরামের বেবাক মাইনষের কাসে(কাছে) 'কালু পাগলা'।
এইডা অইলো হেই দিনের কাহিনি, আইজ এক বিরাট লাম্বা কিচ্ছা।
মাইনষ্যের শরীর ছাইড়া, একটা পেঁসা(পেঁচা) অইয়া যাওনের কিচ্ছা!


©সুব্রত ব্রহ্ম
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৪
ঢাকা।