আমি বিদ্রোহী নই, তবু তুুমি ইচ্ছে করলেই কারাবাস দিতে পারো।
আমি বুভুক্ষু কুকুর নই, তবু বারংবার এই পৃষ্ঠদেশে কুৎসিত পদাঘাত হানো।
আমি প্রাণ সঞ্চারীনি বৃক্ষ নই, তবু তোমার নির্দয় কুড়াল অবলীলায় গেঁথে দাও।
আমি শহীদের রক্ত ভেজা মাটি নই, তবু রোজ বর্বর আক্রমণে, ধর্ষিতার হাহাকারে চূর্ণ হয় আমার বুক।
আমিতো ঘুমিয়ে গেছি, চিরতরে ঘুমিয়ে গেছি।
যেদিন আপনার রবি অস্ত গেলো, যেদিন প্রাণের কবি চির স্তব্ধ হয়ে গেলো!
ভাগ্যিস, সূর্য পুরুষ চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো, নাহলে-


নাহলে আজ ফের, বর্বরের পৃষ্ঠদেশে মহাশিঙা গুঁজে দিয়ে,
হুংকার ছেড়ে আমি 'সূতপুত্র বিদ্রোহী' জুড়তেম প্রলয় নৃত্য, 'প্রণদ নাদ প্রচন্ড'।
প্রতি ফোটা রক্তের দাম, প্রতিটি স্বেচ্ছাচারী কুড়ালের আঘাত,
প্রতিটি লুটে নেয়া দিন, হিংস্র কুৎসিত  পদাঘাত-
কড়ায়গণ্ডায় ফিরিয়ে দিতেম; মনে করিয়ে দিতেম-


"আমি উত্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন
আমি বিশ্বতোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়-কেতন
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে
তাজী বোর্রাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে।


আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নিয়াদ্রি, বাড়ব-বহ্নি, কালানল
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ
আমি ত্রাস সঞ্চারি ভূবনে সহসা সঞ্চারি ভুমকিম্প।"


আমি ঘুমিয়ে গেছি মাগো, তোমারই তরুছায়া তলে, পরম শান্তিতে।
যেখানে দীঘির শান্ত জলে খেলা করে তমালের ছায়া, তির্যক সূর্যালোক-
গাছের পাতার ফাঁক গলে, মাছেদের ভীরে মিশে যায়,
মসৃণ পদ্ম পাতার শীতল তলে, ব্যাঙের ছানারা নিশ্চিত আশ্রয় খুঁজে পায়-
সেখানেই রেখে গেলাম, চরম মূল্যে কেনা, প্রিয় স্বাধীনতা।


©সুব্রত ব্রহ্ম
২৬শে জুন, ২০১৬।


(কবিতাটির ভাবানুযায়ী দৃশ্যপট তৈরীর প্রয়োজনে কোটেশন করা অংশ বিশেষ "বিদ্রোহী" কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে)