অনিরুদ্ধ:


প্রথম স্পর্শ অথবা শেষ চুম্বনের ব্যাকুলতায় যে অনুরণনের জন্ম দিয়েছিলে,
তারা একেকটি দীর্ঘশ্বাস হয়ে অসীমে বিলীন হয়েছে আজ বহুদিন।
মাটির উপরে ঘাস, ঘাসের ডগায় লেগে থাকা শিশির বিন্দু আমার আঙ্গুল ছুঁয়ে বহুবার-
তোমার নরম ঠোঁটে অনুরোধের আকুতি এঁকে দিয়েছে।
একটা জীবনে আর ক'টা দিন থেকে যাওয়ার আকুতি!
একদিন বৃষ্টিস্নাত কাক ডাকা ভোরে, বাহুডোরাবদ্ধ 'প্রিয়তমা'
প্রতিক্ষার দেয়ালের ও'ধারে একটু একটু করে অদৃশ্য হয়ে গেছে।
মাটির খুব গভীরে নয়, বরং উপরিতলের খুব কাছাকাছি-
ঘাস ও শিশিরের চাদরের তলায়, একদিন হটাৎ হাসতে হাসতে লুকিয়ে গেছে!
জনারণ্য হতে অনেক দূরে, শীতল গহ্বরে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে।
ভালো আছো তো? কেমন করে কাটছে সময়?
তোমার না অন্ধকারে ভয়, একা থাকার ভয়?


অনিন্দিতা:


মাটির অনেক গভীরে নয়, বরং উপরি তলের খুব কাছাকাছি।
যেখানে হৃদয়ের উষ্ণতায় একমুঠো আকাশ ভিজে যায়,
গাছের গায়ে-গায়ে সবুজ বিপ্লবে- শাখা-প্রশাখারা নেচে গেয়ে ওঠে।
শতকোটি প্রাণের নিয়ত উদগীরনের মধ্যেও-
'প্রিয়তম' হারানো একটি প্রাণে, আরো একবার জাগরণী সুর বেজে ওঠে।
যেখানে রাতের তারার দিকে তাকিয়ে এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায়-
সবটুকু আলো জল হয়ে যায়;
সেই পার্থিব জগতের অপার্থিব বলয়ে আমার বাস!
মাটির খুব গভীরে নয়, বরং উপরি তলের খুব কাছাকাছি।
যেখানে হৃদয়ের উষ্ণতায় একমুঠো রোদ ম্লান হয়ে যায়,
সেখানেই খুঁজে দেখো, আজও আমি তোমারই, এক ও অবিচ্ছেদ্য।


আমি:


ভোরের কুয়াশায় ভিজে আছে পাথরের বেদী,
রাশিরাশি শুকনো পাতা ঝরে পড়ছে খোয়া বিছানো পথে।
পথের এক প্রান্তে, 'এক জীবন' পড়ে রয়েছে।
আর অন্য প্রান্তে, অনন্ত সময়, যেন স্থির, অবিচল।
এইতো জীবন! রাস্তার এপাড় আর ওপাড়।
কিছু হারিয়ে, কিছু সঞ্চয় করে, কতো রকম ছবি এঁকে চলি এক জীবনে।
একটা ল্যাম্পপোস্ট, একটা রাত জাগা পাখি, পাখির ডানায় ভোর।
ভোরের আলোয় আমাদের জাগতিক যতো পাওয়া না পাওয়া,
সেই সব হিসেবের খাতায়, এক মুঠো রোদ ম্লান হয়ে যায়।


©সুব্রত ব্রহ্ম
ডিসেম্বর ১- ২, ২০১৭ইংঃ
ময়মনসিংহ।