কেমন অনায়াসে তুমি চলে গেলে জরায়ুর জোঠরে
বাকবন্দি খেলায় শীতল পাটির তলদেশে রইল পড়ে।
তখন কিছু পাখিদের বুকে আগুন লেগে যায়।
অচেতন পাতার উত্তাপ রোদ্রের চেতনা ছাপিয়ে পড়ে দিগন্তের শেষ নীলিমায়।
তখন তুমি ওঠো জেগে, ফিরে যাও সব মানুষের একই ঠিকানায়-
যেখানে উৎসব হয় শুরু শুধু ক্ষুধার তাড়নায়।


তখনও কি সে জানত? যে- ওদের ঘরে আলো জ্বালাতে নাই,নাই কাঠ পোড়ানো জ্বালানি
কংক্রিটের উত্তপ্ত দেহে পবিত্র শান্তি জল নিতে নেই মালিনী।


ওদের দুয়ারে এসে দাঁড়ায় নি কোনো আনন্দ
ওদের শরীরে নাকি শুধু মড়া পোড়ানোর গন্ধ।
অঞ্জলি পেতে দেয়নি কেউ ভিক্ষা, বলে নি কেউ জল দাও।
ওরা অশপৃশ্ব-ছোট জাত ক্ষুধায় তৃষ্ণায় ঝলসে গেছে গোটা গাঁও।
সে যে চন্ডালিকা, যাকে রিক্ত সিক্ত করেছে চৈত্রের বৌদ্ধ দুপুর।
তৃষ্ণায় জিভ ছুলে যাচ্ছে এক ফোঁটা জলের জন্য। কিন্তু নেই কোনো পুকুর-


দিগন্তে ক্ষরায় ফাটা মাঠ পেরিয়ে বালি খুঁড়ে আনতে হবে জল
ক্ষুধার অন্ন আনতে হবে রাঢের জঙ্গলে ফোটা ফল।


তারপর ফিরে আসতে হবে বাবুদের টলটলে জলের পুকুরের পাশ বেয়ে
আর্তনাদ করে ওঠে ভিতরের মানুষটা- তারা চন্ডালিকা বলেই কি জীবনটা অন্ধকারে যাবে ছেয়ে।


নেই কোনো নিস্তার? রক্তে-মাংসে গড়া তাদের রক্তও তো লাল। কেন তবে ভেদাভেদ হায়!
মাপকাঠিতে তাকিয়ে আছে ওদের গোটা গাঁ, করুন স্বরে বলছে মনে- শেষ কবে তার প্রতিক্ষায়।।