বিরাট নামি দামি শহরে
হাজার হাজার জনতার ভিড় উপচে পড়ছে
এই হাজার জনসমুদ্রের মাঝে।
আজ ও চোখে পড়ে দারিদ্র্য অসহায় ক্ষুধার্তদের।
তারাও ভিড় জমিয়েছে দুটো ভাতের আশায়।
কিছু পাবে ব'লে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে ও।
একদিন চোখে পড়ে অসহায় নীরিহ শিশুকে
যার নাম পল্টন। সে থাকে পাশের বস্তিতে।
ছোট খাটো চেহারা, মাথায় এলো কেশ,
রুক্ষ-শুষ্ক শরীর যেন পাট কাঠির মত।
ওই ও জনতার মাঝে এসে দাঁড়িয়েছে কিছু পাওয়ার আশায় - যাতে তার ভরে পেট।
কোথা গেলে পাবে এঁটো ভাত-কাঁটা-
তাই খেয়ে সে মেটাবে তৃপ্তি, মেটাবে ক্ষিদা।
শত ক্ষুধার্তের মত সেও হাত বাড়িয়ে আছে
বড় লোকদের কাছে কিছু খাওয়ার - চাইছে দুটো ভাত।
ভারত স্বাধীন! তবুও যেন ক্ষুধার্ত আর কাঙাল গরীব লোকের নেই অভাব।
কেন তারা এত অসহায়?
কেন তারা মানুষের কাছে আজও চায়
হাত পেতে দুটো ভাত?
কেন আজও এই ভারতে দেখা যায়
এই মর্মান্তিক ঘটনা? -
এর কী নেই কোন নিস্তার?-
যাদের এত কিছু আছে তবু তারা কেন
আজ ও নিজের আখের গোছাতেই ব্যতি ব্যস্ত?
তাদের দিকে যায় না তাকানো-নেই পরনের
ভাল কাপড়। - নেই মাথায় তেল,
দু মুঠো অন্ন ও জোটে না ঠিক মত।
এত কষ্ট - তবু ও পল্টন জরাজীর্ণ অবস্থায়
পড়ে থাকা অসহায় এক বৃদ্ধাকে
সাহায্যের হাত দেয় বাড়িয়ে।
আর সভ্য সমাজের লোকেরা
তাকে সাহায্য করা তো দূর কী বাত্ -
ঘুরে পর্যন্ত ও তাকায় না।
কিন্তু পল্টন-সে তার সাহায্যের হাত দেয় বাড়িয়ে।
যদিও সে পারবে না ঠিক মতো সামলাতে
তবুও চেষ্টা করছে আ-প্রাণ।  -
আর দূরে দাঁড়িয়ে সব অমানুষের দল-
যাদের বিবেক মনুষত্ব্য বলে কিছুই নেই
তারা হা করে আছে চেয়ে - সাহায্যের হাত
না বাড়িয়ে ঐ অপরূপ দৃশ্য দেখে করছে
আনন্দ উপভোগ।
এটাই তাদের কাছে পাওয়া সবচেয়ে বড় উপহার।
সে হতে পারে মুর্খ, তবু ও আছে তার মানবিকতা।
তার কাছে না থাকতে পারে টাকা
তবে আছে বিবেক মনুষত্ব্য বোধ।
আর যারা শিক্ষিত ভদ্র সভ্য জাতির লোক
তাদের কাছে থাকতে পারে অনেক অনেক টাকা - কিন্তু নেই কোন বিবেক মনুষ্যত্ব বোধ।
তাই তারা এই অসহায়দের কুটিল অবস্থা
দেখে করতে পারে উপহাস। -
পারে তাদেরকে রাস্তার ইট পাথরদের মত
ছুড়ে ফেলে দিতে আস্তা কুড়ে।।


                           বৃষ্টি মন্ডল
                               (বনি)
(এই কবিতাটি কাউকে উদ্দেশ্য করে লেখা নয়। যদি ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে ক্ষমা মার্জনিয়। ছোট বোন বা মেয়ে বলে ক্ষমা করবেন।)