ছোটন বেলায় খেলতাম আমি চিলাই নদীর পাড়ে, সেই
নদীটি স্বাভাব কবি গোবিন্দ চন্দ্র দাসের বর্ষার বিল বলে।
চৌত্র মাসের খাঁ খাঁ রৌদ্রে পানিতে ঝাঁপায় মোরা, সময়
জ্ঞানের মালুম ছিল না, ছিল না বাড়ী ফেরার তাড়া !

নদীর উপর পানসি নৌকা দোল দিয়ে যায় মনের পোকা
নদীর পাড়ে ধানের ক্ষেত সবুজ রং-এ ভরা বেশ।
বলাকারা উড়ছে সারি, দুর দিগন্তে ছুটা ছুটি, নীল আকাশে
মেঘের ঘটা, দুই নয়নে স্বপ্নের জটা ।


পাড়ার মহাল্লার দামাল ছেলেরা দল বেঁধে নাইতে নামে
বর্ষাকালে জোয়ার ভাটা নদীর বুকে ঘোরা ট্যাপা,
গ্রামের বধু কলসি কাঁকে ঘোমটা মাথায় ধীরে হাঁটে !


নদীর পাড়ে ঘাট নাই, পা টিপে সাবধানে নীচে যাই,
ভরা কলসি বধূর কাঁকে, কোমর দুলাইয়া পথে হাঁটে
ভেজা কাপড়ে শরীর জড়ায়, অঙ্গ দেখে পুলক জাগায় ।


চুলের খোঁপা আবছা দেখায়, মুখ বদনে পানি গড়ায়
ভিজা কাপড় গলায় উঠে, আঁচল টেনে শরীর ঢাকে,  
মনে অনেক প্রশ্ন জাগে ! মন ছুটে যায় বঁধুর কাজে ।


পটল চেরা চোখের চাহনি, উগলে পড়ে কলসির পানি
ভেজা কাপড় পায়ে জড়ায়, টাল সমালে সামনে আগায়।
পাকা শিল্পির রং তুলিতে, পায়ের ছাপে ছবি আঁকে, যত্ন
করে আঁকা ছবি, একান্ত মনে আমি দেখি।


দ্রুতলয়ে বঁধু হাঁটে, প্রাতিচ্ছায়া পড়ে মেঠো পথে।
গাঁয়ের বধুর বিনুনী থেকে সুগন্ধি ছড়ায় চারিপাশে,
মনটা ভরে হৃদ আকাশে !