সওয়াল জবাব
                                      সুনিপা চ্যাটার্জি


একটা পুলিশের চাকুরীর ইনটারভিউ হবে , রাধেশ্যাম  ইনটারভিউ দিতে গেছে। অধিকর্তা  রাধেশ্যামকে জিজ্ঞাসা করে ছিল একশত টাকা প্রতি কিলো হিসাবে, পঞ্চাশ গ্রাম আপেলের দাম কত। এই সামান্য প্রশ্নের উত্তর কত বড় হয়ে ছিল সেটা এই কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে।


                            অধিকর্তা জিজ্ঞাসিল রাধেশ্যামকে একশত
                  টাকা প্রতি কিলো হিসাবে পঞ্চাশ গ্রাম আপেলের  কত দাম,
                      রাধে শ্যাম বলিল যদি  পঞ্চাশ গ্রাম আপেল কিনতে হয়
                            তবে পুলিশের  চাকরি করে  কি কাম।


                               উত্তর শুনিয়া অধিকর্তা পাইল মজা
                      কহিল যদি আমি কিনতে যাই তবে দিব কত দাম
                     রাধেশ্যাম কহিল আদেশ করুন হুজুর  পুরো বাস্ক ভর্তি
                               আপেল পৌঁছে যাবে আপনার ধাম।


                       অধিকর্তা কহিল আচ্ছা তোমার স্ত্রী যদি যায় বাজার
                     তবে সে পঞ্চাশ গ্রাম আপেলের জন্য  দিবে কত দাম,
           রাধেশ্যাম কহিল  হুজুর  বাজার করা স্ত্রীর উপর বড় চাপ আমি চিনি তাকে
        যদি কিনতে হয় পঞ্চাশ গ্রাম আপেল   তবে সে জিজ্ঞাসিবে পঞ্চাশ গ্রামের দাম।


                      অধিকর্তা কহিল আচ্ছা তোমার ভাই যদি যায় বাজার
                     তবে সে পঞ্চাশ গ্রাম আপেলের জন্য  দিবে কত দাম,
                 রাধেশ্যাম কহিল  আমার ভাই যত বার যায় বাজার দেখি সে
                      নিয়ে আসে শুধু মুলো, বেগুন, আলু আর কাঁচা আম।


                       অধিকর্তা কহিল আচ্ছা তোমার বোন যদি যায় বাজার
                      তবে সে পঞ্চাশ গ্রাম আপেলের জন্য  দিবে কত দাম,
                   রাধেশ্যাম কহিল   আমার বোনের হয়েছে বিয়ে  অনেকদিন
                         আগে, এখন সে আর তার স্বামী জানে কত দাম।


                      অধিকর্তা কহিল আচ্ছা তোমার বাবা তো  বাজার যায়
              রাধেশ্যাম কহিল    না হুজুর নেই তার দাঁত সে এখন কলা খায়।


          কিছুটা বিরক্ত হইয়া রাধেশ্যাম  উল্টে   জিজ্ঞাসা   করিল  অধিকর্তাকে
                          হুজুর বেতন  তো দিবেন একজন লোককে,
                          অপেল কিনতে পাঠালেন পুরো পরিবারকে।


           মৃদু হাসিয়া অধিকর্তা কহিল তোমার আছে কোন বন্ধু রাধ্যেশ্যাম,
                           রাধেশ্যাম কহিল    হাঁ হুজুর  সীতারাম ।
                            সে কি আপেল খায়, হাঁ কেউ দিলে খায়
                                  না হলে কোথায় পায়।


       অধিকর্তা কহিল আচ্ছা কোন সাধারন লোক ধর কিনতে গেল আপেল।
           সাধারন লোকের কথা উঠতেই রাধ্যেশ্যাম হল গম্ভীর কহিল হুজুর
    সাধারন লোকের কি অবস্থা তা তো আপনি জানেন, সে কি কিনতে পারে আপেল।
         সাধারন লোক তো আপেল বিক্রি করে, কিনতে যায় আসাধারন  লোক।


             অধিকর্তা কহিল রাধ্যেশ্যাম তুমি তো প্রশ্নটাকে টেনেছ লম্বা
                   রাধ্যেশ্যাম কহিল হুজুর প্রশ্নটা ছিল শুরু থেকে
                   অপছন্দ আমার, উত্তর দিতে তাই হয়েছে লম্বা।


             আমার মনে হয় সংসারে যত দুঃখ দারিদ্র তার কারন এই আপেল।
                 ধরুন যদি সৃষ্টি শুরুতে আদম এবং ইভ আপেল না খেতেন,
                        তবে আজ না আমি হতাম না আপনি হতেন,
                           না একশত গ্রাম হত না  পঞ্চাশ গ্রাম,
                       না আপনি সাহেব হতেন না আমি রাধ্যেশ্যাম।


                            ইন্টারভিউর পরিনাম হলো এইরকম
                        আজকাল রাধ্যেশ্যাম নিজে খায় ভরপেট
                      কিন্তু সাহেবের জন্য পাঠায় পঞ্চাশ গ্রাম আপেল।


                                            স মা প্ত